বাংলারজমিন

মৌলভীবাজারে বাঁশ আহরণে ইজারাদারকে বন বিভাগের বাধা

স্টাফ রিপোর্টার, মৌলভীবাজার থেকে

২২ এপ্রিল ২০১৮, রবিবার, ৯:১৫ পূর্বাহ্ন

মৌলভীবাজারের জুড়ী রেঞ্জের অধীনে সাগরনাল বাঁশমহালের বাঁশ আহরণে বাধা প্রদানের অভিযোগ উঠেছে। আদালতের নির্দেশনা থাকার পরও বন বিভাগের লোকজন ইজারদারকে বাঁশ আহরণে বাধা দিচ্ছেন। জানা যায়, গেল বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ নানা কারণে ইজারাকৃত ওই মহালের ১১ লক্ষাধিক বাঁশ আহরণ করতে পারেননি। ইজারাদার বিষয়টি প্রথমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে অবহিত করেন। পরে বাধ্য হয়ে উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হন। আদালত ক্ষতিগ্রস্ত মহালদারকে বাঁশ আহরণের জন্য ৪ মাস সময় বাড়িয়ে বন বিভাগকে সহযোগিতা করার নির্দেশ দেন। কিন্তু বন বিভাগ উচ্চ আদালতের এই নির্দেশ মানতে রাজি নয়। আদালতের নির্দেশ উপক্ষো করে মহালের বাঁশ আহরণে বাধা দেয়ার অভিযোগ করছেন ক্ষতিগ্রস্ত ইজারাদার। জানা গেছে, মৌলভীবাজারের জুড়ী রেঞ্জের অধীনস্থ সাগরনাল বাঁশমহালের ইজারাদার মো. মামুনুর রশীদ ২০১৬ সালের ১লা সেপ্টেম্বর কার্যাদেশ গ্রহণের পর থেকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, হাতি ও শ্রমিক সঙ্কট এবং মহাল থেকে পানিপথে বাঁশ নামানোর সময় নদীপথে ভারতীয় বিএসএফ’র বাঁধার কারণে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বাঁশ আহরণ ও পরিবহন করতে পারেননি। এর প্রেক্ষিতে ইজারাদার ২০১৭ সালের ১লা অক্টোবর ও ৩১শে ডিসেম্বর পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বরাবরে আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে স্থানীয় প্রতিবেদনে ২২ নং শর্ত মোতাবেক মেয়াদ বাড়ানোর সুযোগ নেই বলে উল্লেখ করা হয়। ফলে বাধ্য হয়ে ইজারাদার হাইকোর্টের শরণাপন্ন হয়ে ৬ মাসের সময় চেয়ে একটি রিট আবেদন (নং ৪৪৩৯/১৮) করেন। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্টের বিচারপতি
নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি জাফর আহমদের দ্বৈত বেঞ্চ গত ২রা এপ্রিল ৪ মাসের মেয়াদ বৃদ্ধি করে বনবিভাগকে সহযোগিতা করার নির্দেশ দেন। বাঁশমহালের ইজারাদার মো. মামুনুর রশীদ জানান, বাঁশমহালে অনাহরিত ১১ লক্ষাধিক বাঁশ রয়েছে। আদালতের রায়ের পর ১৫ দিন অতিবাহিত হওয়ার পর বাঁশ আহরণ করতে গেলে সাগরনাল বিটের ভারপ্রাপ্ত বিট কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম, বন বিভাগের স্টাফ ও বনভিলেজাররা বাঁশ কাটতে বাধা দেন। তারা শ্রমিকদের বাধা প্রদান ছাড়াও শ্রমিকদের বন আইনে মামলার হুমকি-ধমকি দেন। এতে ভয়ে শ্রমিকরা বাঁশ আহরণ না করে ফিরে আসে। আদালত বনবিভাগতে সহযোগিতা করার নির্দেশ দিলেও তারা উল্টো হয়রানি ও বাঁশ পরিবহনের অনুমতি দিবে না এমনকি আমার বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইনে মামলা করারও হুমকি দেয়। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে প্রায় ৭ কোটি টাকার বেশি সরকারে ভ্যাট ও আয়করসহ সমুদয় রাজস্ব পরিশোধ করে এখন নির্দিষ্ট সংখ্যক বাঁশ আহরিত করতে না পারায় ঋণের কারণে সর্বশান্ত হওয়ার উপক্রম। এ ব্যাপারে সাগরনাল বিটের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম জানান, বিভাগীয় কোনো নির্দেশনা না পেলে আমি বাঁশ কাটা তো দূরের কথা কাউকে বনে ঢুকতে দেবো না। কেউ বনে প্রবেশ করলে তাকে আটক করে বন আইনে মামলা করার জন্য রেঞ্জ কর্মকর্তা নির্দেশ দিয়েছেন। এ ব্যাপারে সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আরএস মনিরুল ইসলাম জানান, মহালদার আদালতের আদেশের একটা ফটোকপি আমাকে দিয়েছেন। কিন্তু আদালতের কোনো আদেশ সরাসরি আসেনি। তারপরও আমি বিষয়টি দেখবো।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status