দেশ বিদেশ

প্রাক-বাজেট আলোচনা

মোটরসাইকেল উৎপাদনে ভ্যাট মওকুফের দাবি

স্টাফ রিপোর্টার

২০ এপ্রিল ২০১৮, শুক্রবার, ৯:৩৫ পূর্বাহ্ন

মোটরসাইকেল উৎপাদনে ভ্যাট প্রত্যাহার চেয়েছেন দেশীয় উৎপাদনকারীরা। পাশাপাশি দেশীয় উদ্যোক্তাদের তৈরি মোটরসাইকেল রপ্তানিতে পণ্যের ওপর ক্যাশ ইনসেনটিভ দেয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ অটোমোবাইলস অ্যাসেম্বলার্স অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স এসোসিয়েশন (বিএএএমএ)। গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সম্মেলন কক্ষে প্রাক-বাজেট আলোচনায় মোটরসাইকেল প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলোর কয়েকটি সংগঠন এই প্রস্তাব করে। এনবিআর চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে সভায় রাজস্ব বোর্ডের সদস্যসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে বাংলাদেশ অটোমোবাইল ওয়ার্কসপ মালিক সমিতি, ফোর স্ট্রোক সিএনজি অটোরিকশা অ্যান্ড ফ্রি হুইলার্স মোটরবাইক ওনার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি, বাংলাদেশ মোটর পার্টস ও টায়ার টিউব ব্যবসায়ী সমিতিসহ কয়েকটি সংগঠনের সঙ্গে প্রাক বাজেট আলোচনায় অংশ নেন এনবিআর চেয়ারম্যান।
সভার শুরুতে বাংলাদেশ অটোমোবাইলস অ্যাসেম্বলার্স অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স এসোসিয়েশন (বিএএএমএ) প্রেসিডেন্ট হাফিজুর রহমান লিখিত প্রস্তাব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আমরা যারা মোটরসাইকেল রপ্তানি করি, তাদেরকে নগদ সহায়তা দেয়া হোক। এটি অপ্রচলিত পণ্য হিসেবে তালিকাভুক্ত করে এই সুবিধা দেয়া যায়। এ সময় ব্যবসায়ী সংগঠন এফবিসিসিআই নেতা আবদুল হক বলেন, দেশীয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একমাত্র ওয়ালটন এখন ভ্যাট ও রপ্তানিতে সুবিধা পাচ্ছে। এটা হতে পারে না। আপনি যখন দেবেন সব প্রতিষ্ঠানকেই দিতে হবে। হাফিজুর রহমান বলেন, মোটরসাইকেল রপ্তানির ক্ষেত্রে আগামী ৫ বছর কর রেয়াত সুবিধার প্রস্তাব করছি। আমরা নেপালসহ কয়েকটি দেশে মোটরসাইকেল রপ্তানি করছি। আফ্রিকায় রপ্তানির চেষ্টা করছি। তিনি বলেন, কিন্তু এই সেক্টরে আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী চীন। সে দেশের সরকার এই খাতে প্রণোদনা দেয়ায় তারা ওইসব দেশে বাজার দখল করেছে। তাই আমরা বিদেশে মোটরসাইকেল রপ্তানির জন্য ২০ভাগ নগদ প্রণোদনা সুবিধা প্রদান করার প্রস্তাব করছি। তিনি আরও বলেন, ট্রাক ট্রেইলার ও কন্টেইনার ক্যারিয়ার আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক রয়েছে। আগামী বাজেটে তা কমাতে হবে। এ সময় এনবিআর চেয়ারম্যানের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেশে এই ধরনের পরিবহন ৫ থেকে ৬ হাজার রয়েছে। তাদের বক্তব্যের পর এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, মোটরসাইকেল রপ্তানির ক্ষেত্রে আমরা ইনসেনটিভের বিষয়ে সুপারিশ করতে পারবো, এটা আমাদের দেশের জন্য ভাল। তিনি বলেন, আমরা একটি বিনিয়োগ বান্ধব ও বাণিজ্যমুখী বাজেট প্রণয়নের চেষ্টা করছি। এজন্য একটি কমিটি করা হয়েছে। ওই কমিটির প্রস্তাবের আলোকে বাজেট প্রণয়ন করা হবে। যেন একটি সার্বজনীন বাজেট করা যায়।
এর আগে বাংলাদেশ অটোমোবাইল ওয়ার্কসপ মালিক সমিতি, ফোর স্ট্রোক সিএনজি অটোরিকশা অ্যান্ড ফ্রি হুইলার্স  মোটরবাইক ওনার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি, বাংলাদেশ মোটর পার্টস ও টায়ার টিউব ব্যবসায়ী সমিতিসহ কয়েকটি সংগঠনের সঙ্গে প্রাক বাজেট আলোচনায় অংশ নেন এনবিআর চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। এ সময় তিনি বলেন, দীর্ঘ সময় থেকে পরিবহন বাণিজ্য করে আসলেও কর দেয় না সিএনজিচালিত অটোরিকশার মালিকরা। এতে রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। এ অবস্থায় আগামী বাজেটে সিএনজিচালিত অটোরিকশা মালিকদের ট্রেড লাইসেন্স ও করের আওতায় আনা হবে। সভায় ফোর স্ট্রোক সিএনজিচালিত অটোরিকশা অ্যান্ড ফ্রি হুইলার্স মোটরবাইক ওনার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি মো. আনসার আলী বলেন, সিএনজি অটোরিকশা মালিকদের ট্রেড লাইসেন্স থাকতে হবে। পাশাপাশি মালিকদের করের আওতায় আনা উচিত। একই সঙ্গে সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে অ্যাপভিত্তিক সেবায় আসতে হবে। তিনি আরও বলেন, বাধ্যতামূলক এসোসিয়েশনের সদস্য হওয়া ও সনদপত্র থাকতে হবে। ৩২ হাজার বেবি ট্যাক্সি ছিল, বর্তমানে ২০ হাজার সিএনজিচালিত অটোরিকশা আছে। ১২ হাজার লোকই বেকার। সংগঠনটির প্রস্তাবের পক্ষে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, সিএনজি চালিত অটোরিকশা মালিকদের ট্রেড লাইসেন্স থাকা উচিত। অনেকেই বলছেন, বাস-ট্রাককে কীভাবে আমরা করের আওতায় আনতে পারি। আগামী বাজেটে সিএনজি চালিত অটোরিকশা মালিকদের ট্রেড লাইসেন্স ও ই-টিআইএন বাধ্যতামূলক করা হবে। পরিবহন মালিক সমিতির উদ্দেশে তিনি বলেন, বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে চলে গেছে। সবাই বলে এটা কমান, ওটা কমান। অনেককেই আবার আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। পরিবহন ব্যবসার পাশাপাশি অন্য একটা ব্যবসা দেখিয়ে যাতে কর ফাঁকি দেয়া না যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখা হবে। পরিবহন খাতে যাতে কর বাড়ানো যায় তা নিয়ে আপনাদের সঙ্গে বসবো।

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status