এক্সক্লুসিভ

কোন্দল মেটাতে ঢাকায় তলব

কাজী সোহাগ

১৯ এপ্রিল ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ৯:০২ পূর্বাহ্ন

নির্বাচনী এলাকায় দলীয় কোন্দল মেটাতে সংশ্লিষ্ট নেতাদের ঢাকায় তলব করছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। সিনিয়র নেতারা তাদের বক্তব্য শুনছেন। বাতলে দিচ্ছেন সমাধানের পথ। জনসম্পৃক্ততা রয়েছে এমন নেতাদের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ থাকারও নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। ঢাকায় ডাক পাওয়া বেশ কয়েক নেতা মানবজমিনকে বলেন, নির্বাচনের আগে দলের এ ধরনের উদ্যোগ প্রশংসনীয়। এতে অনেক এলাকায় দলীয় কোন্দল কমবে। অন্যদিকে কোন্দল মেটাতে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা বলছেন, সাংগঠনিক কাজে গতি ধরে রাখতে এর বিকল্প নেই। প্রথমে আমরা চেষ্টা করছি কোন্দল মেটাতে। ব্যর্থ হলে দলের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি শেখ হাসিনা তো রয়েছেনই। সংগঠনের কার্যক্রমে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত নয় অথচ কোন্দল করছেন এমন নেতাদের কড়া ভাষায় সতর্ক করা হচ্ছে। প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। আবার যেসব নেতা কেন্দ্রে ভালো যোগাযোগ রাখছেন কিন্তু এলাকায় সম্পৃক্ততা কম তাদেরও সতর্ক করা হচ্ছে। জানিয়ে দেয়া হচ্ছে, এটা নির্বাচনের বছর। জনগণের পাশে থাকতে হবে। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে হবে। নির্বাচনী এলাকার মানুষের পছন্দের বাইরে কাউকে গুরুত্ব দেয়া হবে না। আর যারা দলীয় বিশৃঙ্খলা তৈরি করছেন তাদের বিষয়ে শিগগিরই ব্যবস্থা নেয়া হবে। নেতারা জানান, দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশে তারা কোন্দল মেটাতে এ ধরনের উদ্যোগ নিয়েছেন। সম্প্রতি সারা দেশের কোন্দলের কারণ অনুসন্ধানে ৫ সদস্যের অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছে আওয়ামী লীগ। ওই কমিটির প্রধান হলেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্যাহ। কমিটির অন্য সদস্যরা     হলেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান। এ প্রসঙ্গে আবদুর রহমান মানবজমিনকে বলেন, তথ্য সংগ্রহ করে সারা দেশের সবচেয়ে বেশি কোন্দলপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করে ওইসব এলাকার নেতাদের ঢাকায় তলব করা হচ্ছে। তৃণমূলের ওইসব নেতার সঙ্গে কথা বলে কোন্দল মীমাংসায় চেষ্টার পাশাপাশি তাদের থেকে তথ্য সংগ্রহ করবে কমিটি। ওই সব তথ্য পর্যালোচনা করে কমিটি আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে রিপোর্ট জমা দেবে। তিনি বলেন, এ ধরনের উদ্যোগে দলের কোন্দল কমবে বলে মনে করি। নির্বাচনের আগে দলকে সুসংগঠিত করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। এর আগে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বেশ কয়েক নেতাকে দলের ধানমন্ডি কার্যালয়ে ডেকে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর পক্ষে তাদের সতর্ক করেছেন। প্রথম দিকে ঢাকার পার্শ্ববর্তী কয়েক জেলার নেতাদের দলীয় কার্যালয়ে ডাকা হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট নেতারা। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য জেলার নেতাদেরও ডাকা হবে। এর আগে দলের ধানমন্ডি কার্যালয়ে ডাক পেয়েছেন এমন দুজন এমপি মানবজমিনকে বলেন, দলীয় সভাপতির পক্ষে দলের সাধারণ সম্পাদক তাদের বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। বিশেষ করে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও নৌকার পক্ষে এখন থেকেই ভোট চাওয়ার কথা বলেছেন। এ ছাড়া নির্বাচনী এলাকায় দ্বন্দ্ব  নিরসন করে ঐক্যবদ্ধ থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। এদিকে নির্বাচনকে টার্গেট করে এরই মধ্যে নির্বাচনী এলাকামুখী হচ্ছেন আওয়ামী লীগ দলীয় নেতারা। তারা যোগ দিচ্ছেন নানা সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মসূচিতে। সবমিলিয়ে তাদের টার্গেট আগামী নির্বাচনে আবারও দলের টিকিট পাওয়া। দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে নির্বাচনী এলাকার মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়েছেন তারা। কিভাবে জনসংযোগ বাড়িয়ে আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়া যায় তা নিয়ে সতর্ক হচ্ছেন আওয়ামী লীগের নেতারা। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি দলীয় বৈঠকে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, জনবিচ্ছিন্ন কাউকেই আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন দেয়া হবে না। আগামী নির্বাচন সহজ হবে না। অনেক কঠিন হবে। বিএনপি নির্বাচনে আসবে। সরকার অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করেছে বলে আত্মতৃপ্তিতে ভুগলে কিংবা নির্বাচনকে সহজভাবে নিলে চলবে না। জনগণের কাছে যেতে হবে। কর্মীদের মূল্যায়ন করতে হবে। সরকারের সব উন্নয়ন কর্মকাণ্ড মানুষের কাছে তুলে ধরে জনগণের মন জয় করতে হবে। দলীয় প্রধানের ওই নির্দেশনার পর মূলত জনবিচ্ছিন্ন নেতারা এলাকায় নতুন করে যাতায়াত বাড়িয়ে দেন। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বিতর্কিত ও জনগণের কাছে অগ্রহণযোগ্য কোনো ব্যক্তি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবে না।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status