এক্সক্লুসিভ

জাল ভিসার কারবারি তারা

স্টাফ রিপোর্টার:

১৮ এপ্রিল ২০১৮, বুধবার, ৮:৩৮ পূর্বাহ্ন

দেখতে হুবহু আসল ভিসা। পাসপোর্টের সঙ্গে যুক্ত থাকে। ভিসা প্রসেসিংয়ের জন্য নেয়া হয় অরিজিনাল সব ডকুমেন্ট। বিমানের টিকেটের সঙ্গে বিদেশ গিয়ে হাত খরচার জন্য ডলার এন্ডোর্স করানো হয়। নির্ধারিত তারিখে বিমানবন্দর পর্যন্তও নিয়ে যাওয়া হয়। আর সেখান থেকেই কৌশলে যাত্রীর সঙ্গে থাকা ডলার, জাল ভিসাযুক্ত পাসপোর্ট নিয়ে হঠাৎ উধাও। পরে ফোনে বলা হয় অনিবার্য কারণবশত আজ ফ্লাইট হচ্ছে না। পরবর্তী তারিখ ফোনে জানিয়ে দেয়া হবে। পরবর্তী ফ্লাই তারিখ আর জানানো হয় না। দীর্ঘদিন ধরে সেনজেনের জাল ভিসা তৈরি করে প্রতারণা করে আসছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা সংস্থার উত্তরের একটি টিম সোমবার রাতে এই প্রতারক চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। তারা হলেন, মো জিয়াউল হক জুয়েল, মো. জাকারিয়া মাহামুদ, মো. মাহবুবুর রহমান, মো. মামুন হোসেন। এ সময়
তাদের কাছে থেকে ১৪টি জাল সেনজেন ভিসাযুক্ত বাংলাদেশি পাসপোর্ট, ব্যাংকের জাল হিসাব বিবরণী, ভিসা তৈরির বিপুল পরিমাণ মেট স্টিকার পেপার, নর্থ সাইপ্রাসে প্রেরণের জন্য জাল ইনভাইটেশন, ব্যাংক গ্যারান্টি, জাল ডকুমেন্টস তৈরির কম্পিউটার, স্ক্যানার ও প্রিন্টার জব্দ করা হয়। গতকাল ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মহানগর গোয়েন্দা সংস্থার যুগ্ম কমিশনার আবদুল বাতেন।

সংবাদ সম্মেলনে বাতেন বলেন, এই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে। তাদের আলাদা আলাদা জনবল রয়েছে। কেউ অল্প টাকায় ইউরোপ যেতে আগ্রহীদের সংগ্রহ করে। একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকার বিনিময়ে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে চুক্তি করা হয়। আরেকজন ভিসা প্রসেসিংয়ের যাবতীয় পেপারস তৈরির কাজ করে। বাতেন বলেন, সবগুলো কাজ তারা এত সূক্ষভাবে করে থাকে যে, দেখে বুঝার উপায় নাই যে তারা প্রতারণা করছে। এমনকি বিশ্বাস অর্জনের জন্য তারা প্রসেসিং ফির ২০ হাজার টাকা ছাড়া আর কোনো টাকা নেয় না। ভিসা পাওয়ার পর বিদেশ গিয়ে বাকি টাকা নেয়া হবে বলে প্রতারক চক্র জানায়। এছাড়া ভিসা প্রসেসিংয়ের যাবতীয় কাগজপত্র বৈধ নেয়া হয়। নির্দিষ্ট সময় শেষে বিদেশ যেতে আগ্রহী ওই যাত্রীকে জানানো হয় তার ভিসা হয়ে গেছে। এখন নিজ খরচে একটি টিকেট ও বিদেশ গিয়ে খরচ করার জন্য ৩০০ থেকে ৫০০ ডলার এন্ডোর্স করতে হবে। তিনি বলেন, ভালো সুযোগ পাওয়ার আশায় যাত্রীরা তাদের কথা বিশ্বাস করে ডলার এন্ডোর্সও করে সঙ্গে রাখে। এমনকি ফ্লাইটের দিন বিমানবন্দরে গিয়ে তাদেরকে বসিয়ে রাখে। একপর্যায়ে কৌশলে পাসপোর্ট ও ডলার নিয়ে তারা পালিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর তারা ওই যাত্রীকে ফোন করে বলে অনিবার্য কারণবশত আজকে আর ফ্লাইট হবে না। পরে জানিয়ে দেয়া হবে তারিখ। এই বলে তারা ফোন বন্ধ করে দেয়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর আর তাদের সন্ধান পাওয়া যায় না। এভাবে তারা অনেক লোকের টাকা আত্মসাৎ  করেছে। বাতেন আরো বলেন, একাধিক ভুক্তভোগীর অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্তে নামে ডিবি। এরই ধারবাহিকতায় এই চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আদালতে তুলে তাদের রিমান্ড চাওয়া হবে। রিমান্ডে এনে তাদেরকে ভালোভাবো জিজ্ঞাসাবাদ করলে আরো তথ্য পাওয়া যাবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status