বাংলারজমিন
পঞ্চগড়ে দু’দফায় শিলাবৃষ্টি মাটির সঙ্গে মিশে গেছে কৃষকের স্বপ্ন
পঞ্চগড় প্রতিনিধি:
১৭ এপ্রিল ২০১৮, মঙ্গলবার, ৯:০২ পূর্বাহ্ন
দু’দফায় শিলাবৃষ্টিতে পঞ্চগড় জেলার বিভিন্ন এলাকায় উঠতি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে সব স্বপ্ন মাটির সঙ্গে মিশে যাওয়ায় দিশাহারা হয়ে পড়েছে চাষিরা। অধিক লাভের আশায় এনজিওর ঋণ, জমি বন্ধক ও খাবারের ধান বিক্রি করে হাইব্রিড টমেটোর পাশাপাশি অন্যান্য ফসল আবাদে তারা বিনিয়োগ করেছিলেন। শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে কিছু এলাকায় ব্যাপক শিলাবৃষ্টি হয়। বড় আকারের ওই শিলাতে মাটিতে মিশে যায় কৃষকের ফসল। বিশেষ করে টমেটো চাষিদের ক্ষতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি। সদর উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নের উত্তর দিক থেকে শুরু করে হাড়িভাসা ও চাকলাহাট ইউনিয়ন হয়ে শিলাবৃষ্টি চলে যায় ভারতের দিকে। কৃষকদের দাবি, আগের চেয়ে এবার শিলার আকার ছিল অনেক বড়। তাই ক্ষতিও হয়েছে অনেক বেশি।
এই শিলাবৃষ্টিতে হাইব্রিড টমেটো, ভুট্টা, মরিচ, তরমুজ ও বাদামসহ উঠতি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় টমেটো ক্ষেত। টমেটো গাছ থেকে সব টমেটো ছিঁড়ে মাটিতে পড়ে যায়। সে সঙ্গে গাছের ডালপালা ভেঙে মাটিতে শুয়ে পড়ে। কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, প্রথম দফায় শিলাবৃষ্টিতে পঞ্চগড় জেলার প্রায় ১৫৫ হেক্টর জমির হাইব্রিড টমেটো ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় প্রায় ২৫ হেক্টর। এর মধ্যে প্রায় ৫০ হেক্টর জমির সম্পূর্ণ টমেটো ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে কৃষকদের ক্ষতি হয়েছে প্রায় দেড় কোটি টাকা। তবে, কৃষকদের দাবি ক্ষতিগ্রস্ত জমির পরিমাণ আরো অনেক বেশি। ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে কয়েক কোটি টাকা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পঞ্চগড় জেলায় শীতকালের পরও শীত থাকায় এখানে গত কয়েক বছর ধরে প্রচুর পরিমাণে শীতকালীন টমেটো আবাদ হচ্ছে। এই সময়টাতে দেশের অন্য কোথাও টমেটোর চাষ না হওয়ায় পঞ্চগড়ের টমেটো রাজধানীসহ সারা দেশের চাহিদা মেটায়। কৃষকরা দামও পায় বেশ ভালো। এ জেলার প্রায় সব উপজেলায় হাইব্রিড টমেটো আবাদ হলেও সদর উপজেলার চাকলা, কামাতকাজলদিঘী, হাড়িভাসা, হাফিজাবাদ, সদর, অমরখানা ও সাতমেরা ইউনিয়নে অধিক পরিমাণে টমেটো আবাদ হয়ে থাকে। এই মৌসুমে ইতিমধ্যে বাজারে উঠতে শুরু করেছে পঞ্চগড়ের সবুজ সোনাখ্যাত টমেটো। কিন্তু গত বছরের তুলনায় সরবরাহ একেবারে কম। গত ৩০শে মার্চ পঞ্চগড় জেলায় বিভিন্ন এলাকায় শিলাবৃষ্টিতে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে টমেটো ক্ষেত। শিলাবৃষ্টিতে সদর উপজেলার সদর ইউনিনের ডুডুমারী, শিংপাড়া, জগদল, বলেয়াপাড়া, গোফাপাড়া, হাফিজাবাদ ইউনিয়নের মারুপাড়া, পাঠানপাড়া, জঙ্গলপাড়া, জিয়াবাড়ি, পানিমাছপুকুর, তালমা, বিশমনিসহ বিভিন্ন এলাকা ছাড়াও চাকলাহাট, কামাতকাজলদীঘি, হাড়িভাসা, পার্শ্ববর্তী বোদা উপজেলার কাজলদিঘী কালিয়াগঞ্জ ও বড়শশি ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত বছর এই সময়টতে যে পরিমাণ টমেটো পাওয়া যেত এবার পাওয়া যাচ্ছে তার অর্ধেকেরও কম। তাই এখন যে দাম উঠেছে তার চেয়ে দ্বিগুণ বা তারও বেশি দাম হবে কয়েকদিনের মধ্যে। সদর উপজেলার বলেয়াপাড়া গ্রামের টমেটো ব্যবসায়ী বাবুল হোসেন বলেন, এর আগের বছরগুলোতে আমরা আড়তে বসেই টমেটো কিনতাম। কিন্তু এবার মৌসুম শুরু হয়ে গেলেও সরবরাহ একেবারেই কম। শিলাবৃষ্টির কারণে বেশিরভাগ কৃষকের টমেটো ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। তাই এবার আমরা কৃষকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে টমেটো ক্ষেত থেকে বেশি দামে টমেটো কিনছি। বর্তমানে প্রতিমণ কাঁচা টমেটো আমরা মানভেদে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা দরে ক্রয় করছি। আগামী এক মাসের মধ্যে হয়তো আমাদের প্রতিমণ টমেটো কিনতে হবে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায়। কামাতকাজলদিঘী ইউনিয়নের ভাণ্ডারুগ্রামের কৃষক হামিদার রহমান বলেন, এই মৌসুমে আমাদের এলাকার প্রধান আবাদ হাইব্রিড টমেটো। এবার আমি ১২ বিঘা জমিতে টমেটো চাষ করেছিলাম। খরচ হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা। এর মধ্যে তিন বিঘার জমির টমেটো তোলার সময় হয়েছিল। ব্যবসায়ীরা ক্ষেত দেখেও গিয়েছিল। কিন্তু টমেটো তোলার আগেই শিলাবৃষ্টিতে আমার সব শেষ হয়ে গেছে। ১২ বিঘা টমেটো মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। শিলাবৃষ্টি না হলে আমি কমপক্ষে ২০ লাখ টাকার টমেটো বিক্রি করতে পারতাম। হাফিজাবাদ ইউনিয়নের ধনদেবপাড়া গ্রামের কৃষক আজিজার রহমান বলেন, এই মৌসুমে আমি ও আমার দুই ছেলে মিলে এক একর জমিতে টমেটো আবাদ করেছিলাম। এতে আমাদের খরচ হয়েছিল ৭০ থেকে ৭৫ হাজার টাকার মতো। গাছে ফল তুলবার সময় হয়ে এসেছিল। কিন্তু শুক্রবারের শিলাবৃষ্টিতে আমার সব ক্ষেত ধ্বংস হয়ে গেছে। গাছের টমেটো সব মাটিতে পড়ে শিলার আঘাতে নষ্ট হয়েছে। গাছের কাণ্ড ছিঁড়ে মাটিতে পড়ে গেছে। এখন এই গাছ থেকে আর ফল তোলার সুযোগ নেই। শুধু টমেটো নয়, পাশাপাশি করা এক একর জমির ভুট্টা ও মরিচের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। একই গ্রামের কৃষক আশরাফুল ইসলাম জানান, তারও এক বিঘার জমির টমেটো ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। তাদের এলাকার প্রধান আবাদ হাইব্রিড টমেটো। সবাই কমবেশি জমিতে টমেটো আবাদ করে। বড় আকারের শিলায় সবার ক্ষেত নষ্ট হয়েছে।
পঞ্চগড় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. শামছুল হক দু’দফায় শিলাবৃষ্টিতে কৃষকের ফসলের ক্ষয়ক্ষতির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এই শিলাবৃষ্টিতে হাইব্রিড টমেটো, ভুট্টা, মরিচ, তরমুজ ও বাদামসহ উঠতি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় টমেটো ক্ষেত। টমেটো গাছ থেকে সব টমেটো ছিঁড়ে মাটিতে পড়ে যায়। সে সঙ্গে গাছের ডালপালা ভেঙে মাটিতে শুয়ে পড়ে। কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, প্রথম দফায় শিলাবৃষ্টিতে পঞ্চগড় জেলার প্রায় ১৫৫ হেক্টর জমির হাইব্রিড টমেটো ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় প্রায় ২৫ হেক্টর। এর মধ্যে প্রায় ৫০ হেক্টর জমির সম্পূর্ণ টমেটো ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে কৃষকদের ক্ষতি হয়েছে প্রায় দেড় কোটি টাকা। তবে, কৃষকদের দাবি ক্ষতিগ্রস্ত জমির পরিমাণ আরো অনেক বেশি। ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে কয়েক কোটি টাকা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পঞ্চগড় জেলায় শীতকালের পরও শীত থাকায় এখানে গত কয়েক বছর ধরে প্রচুর পরিমাণে শীতকালীন টমেটো আবাদ হচ্ছে। এই সময়টাতে দেশের অন্য কোথাও টমেটোর চাষ না হওয়ায় পঞ্চগড়ের টমেটো রাজধানীসহ সারা দেশের চাহিদা মেটায়। কৃষকরা দামও পায় বেশ ভালো। এ জেলার প্রায় সব উপজেলায় হাইব্রিড টমেটো আবাদ হলেও সদর উপজেলার চাকলা, কামাতকাজলদিঘী, হাড়িভাসা, হাফিজাবাদ, সদর, অমরখানা ও সাতমেরা ইউনিয়নে অধিক পরিমাণে টমেটো আবাদ হয়ে থাকে। এই মৌসুমে ইতিমধ্যে বাজারে উঠতে শুরু করেছে পঞ্চগড়ের সবুজ সোনাখ্যাত টমেটো। কিন্তু গত বছরের তুলনায় সরবরাহ একেবারে কম। গত ৩০শে মার্চ পঞ্চগড় জেলায় বিভিন্ন এলাকায় শিলাবৃষ্টিতে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে টমেটো ক্ষেত। শিলাবৃষ্টিতে সদর উপজেলার সদর ইউনিনের ডুডুমারী, শিংপাড়া, জগদল, বলেয়াপাড়া, গোফাপাড়া, হাফিজাবাদ ইউনিয়নের মারুপাড়া, পাঠানপাড়া, জঙ্গলপাড়া, জিয়াবাড়ি, পানিমাছপুকুর, তালমা, বিশমনিসহ বিভিন্ন এলাকা ছাড়াও চাকলাহাট, কামাতকাজলদীঘি, হাড়িভাসা, পার্শ্ববর্তী বোদা উপজেলার কাজলদিঘী কালিয়াগঞ্জ ও বড়শশি ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত বছর এই সময়টতে যে পরিমাণ টমেটো পাওয়া যেত এবার পাওয়া যাচ্ছে তার অর্ধেকেরও কম। তাই এখন যে দাম উঠেছে তার চেয়ে দ্বিগুণ বা তারও বেশি দাম হবে কয়েকদিনের মধ্যে। সদর উপজেলার বলেয়াপাড়া গ্রামের টমেটো ব্যবসায়ী বাবুল হোসেন বলেন, এর আগের বছরগুলোতে আমরা আড়তে বসেই টমেটো কিনতাম। কিন্তু এবার মৌসুম শুরু হয়ে গেলেও সরবরাহ একেবারেই কম। শিলাবৃষ্টির কারণে বেশিরভাগ কৃষকের টমেটো ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। তাই এবার আমরা কৃষকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে টমেটো ক্ষেত থেকে বেশি দামে টমেটো কিনছি। বর্তমানে প্রতিমণ কাঁচা টমেটো আমরা মানভেদে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা দরে ক্রয় করছি। আগামী এক মাসের মধ্যে হয়তো আমাদের প্রতিমণ টমেটো কিনতে হবে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায়। কামাতকাজলদিঘী ইউনিয়নের ভাণ্ডারুগ্রামের কৃষক হামিদার রহমান বলেন, এই মৌসুমে আমাদের এলাকার প্রধান আবাদ হাইব্রিড টমেটো। এবার আমি ১২ বিঘা জমিতে টমেটো চাষ করেছিলাম। খরচ হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা। এর মধ্যে তিন বিঘার জমির টমেটো তোলার সময় হয়েছিল। ব্যবসায়ীরা ক্ষেত দেখেও গিয়েছিল। কিন্তু টমেটো তোলার আগেই শিলাবৃষ্টিতে আমার সব শেষ হয়ে গেছে। ১২ বিঘা টমেটো মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। শিলাবৃষ্টি না হলে আমি কমপক্ষে ২০ লাখ টাকার টমেটো বিক্রি করতে পারতাম। হাফিজাবাদ ইউনিয়নের ধনদেবপাড়া গ্রামের কৃষক আজিজার রহমান বলেন, এই মৌসুমে আমি ও আমার দুই ছেলে মিলে এক একর জমিতে টমেটো আবাদ করেছিলাম। এতে আমাদের খরচ হয়েছিল ৭০ থেকে ৭৫ হাজার টাকার মতো। গাছে ফল তুলবার সময় হয়ে এসেছিল। কিন্তু শুক্রবারের শিলাবৃষ্টিতে আমার সব ক্ষেত ধ্বংস হয়ে গেছে। গাছের টমেটো সব মাটিতে পড়ে শিলার আঘাতে নষ্ট হয়েছে। গাছের কাণ্ড ছিঁড়ে মাটিতে পড়ে গেছে। এখন এই গাছ থেকে আর ফল তোলার সুযোগ নেই। শুধু টমেটো নয়, পাশাপাশি করা এক একর জমির ভুট্টা ও মরিচের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। একই গ্রামের কৃষক আশরাফুল ইসলাম জানান, তারও এক বিঘার জমির টমেটো ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। তাদের এলাকার প্রধান আবাদ হাইব্রিড টমেটো। সবাই কমবেশি জমিতে টমেটো আবাদ করে। বড় আকারের শিলায় সবার ক্ষেত নষ্ট হয়েছে।
পঞ্চগড় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. শামছুল হক দু’দফায় শিলাবৃষ্টিতে কৃষকের ফসলের ক্ষয়ক্ষতির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।