এক্সক্লুসিভ

ফারমার্স ব্যাংক জালিয়াতি

চিশতীসহ চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদ

স্টাফ রিপোর্টার

১৬ এপ্রিল ২০১৮, সোমবার, ৯:১১ পূর্বাহ্ন

১৬০ কোটি টাকা সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া ফারমার্স ব্যাংকের মাহবুবুল হক চিশতী ওরফে বাবুল চিশতীসহ চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সকাল থেকে তাদের দুদক কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
মাহবুবুল হক চিশতী ছাড়া বাকি তিনজন হলেন- তার ছেলে রাশেদুল হক চিশতী, ব্যাংকের এসভিপি জিয়াউদ্দিন আহমেদ ও ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মাসুদুর রহমান খান। গত মঙ্গলবার চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর চিশতীকে পাঁচ দিন, অপর তিনজনকে চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
গত মঙ্গলবার সকালে ১৬০ কোটি টাকা আত্মসাৎ এবং মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে রাজধানীর গুলশান থানায় মামলা করে দুদক। উপ-পরিচালক সামছুল আলম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলার নথি থেকে জানা যায়, ফারমার্স ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় অসৎ উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ব্যাংকিং নিয়মাচারের তোয়াক্কা না করে ওই ব্যাংকেরই গুলশান শাখার একটি সঞ্চয়ী হিসাবে বিপুল পরিমাণ অর্থ নগদে ও পে-অর্ডারের মাধ্যমে জমা ও উত্তোলন করেন মাহবুবুল হক চিশতী। তার ছেলেমেয়েদের ও মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন শাখার মোট ২৫টি হিসাবের ১শ’ ৫৯ কোটি ৯৫ লাখ ৪৯ হাজার ৬শ’ ৪২ টাকা সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, তারা ফারমার্স ব্যাংকের এ সন্দেহজনক লেনদেনের বিষয়টি গত বছর থেকে অনুসন্ধান করে আসছে। সে অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে মাহবুবুল হক চিশতী, তার পরিবারের পাঁচ সদস্য, ব্যাংকের সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তাসহ ১৭ জনের বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে গত সপ্তাহে নিষেধাজ্ঞা জারির সুপারিশ করে দুদক। ওই তালিকায় ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান মহীউদ্দীন খান আলমগীরের নাম ছিল না। অথচ বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ তদন্তে ব্যাংকটির সাবেক দুই শীর্ষ ব্যক্তির অনিয়ম তুলে ধরা হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যাংকটির গ্রাহকের ঋণের ভাগ নিয়েছেন মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও মাহবুবুল হক চিশতী। এর মাধ্যমে দুজনের নৈতিক স্খলন ঘটেছে এবং তারা জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন। পরিদর্শন প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যাংকটির জনবল নিয়োগ হয়েছে মূলত এ দুজনের সুপারিশেই। আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে তারা নিয়োগ দিয়েছেন। এ ছাড়া মাহবুবুল হক চিশতীর ছেলে রাশেদুল হক চিশতীর মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান আরসিএল প্লাস্টিকের সঙ্গে ব্যাংকের গ্রাহকদের অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্যও বেরিয়ে আসে। ২০১২ সালে রাজনৈতিক বিবেচনায় অনুমোদন দেয়া ফারমার্স ব্যাংক কার্যক্রম শুরুর পরই অনিয়মে জড়িয়ে পড়ে। আস্থার সংকট তৈরি হলে আমানতকারীদের অর্থ তোলার চাপ বাড়ে। পরিস্থিতির অবনতি হলে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান পদ ছাড়তে বাধ্য হন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও নিরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতী। পরিচালকের পদ থেকেও পদত্যাগ করেন তারা। এক বছর ধরে এ অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন দুদক কর্মকর্তা কাজী শফিউল আলম।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status