শেষের পাতা

আমদানিকৃত চীনা পণ্যের ওপর ট্রাম্পের শুল্কারোপ

মানবজমিন ডেস্ক

২৪ মার্চ ২০১৮, শনিবার, ৯:২৬ পূর্বাহ্ন

চীন থেকে আমদানি করা ৬ হাজার কোটি ডলার মূল্যের পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করতে চলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত একটি আদেশপত্রে স্বাক্ষর করেছেন তিনি। এতে করে বিশ্বের শীর্ষ দুই অর্থনীতির মধ্যে চলা বাণিজ্য যুদ্ধে যেন সরাসরি আঘাত হানলেন ট্রাম্প। তিনি জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে এমন আরো পদক্ষেপ নেয়া হবে। চীনের বিরুদ্ধে বছরের পর বছর মেধাস্বত্ব চুরির অভিযোগ এনে এমন পদক্ষেপ নিতে চলেছেন তিনি। ট্রাম্প প্রত্যাশা করছেন তার এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রকে আরো সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী করে তুলবে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের এমন  পদক্ষেপের পাল্টা জবাব হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে চীনে আমদানি করা শুকরের মাংস, অ্যালুমিনিয়াম, স্টিল পাইপ, ফল, ওয়াইন ইত্যাদি পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের চিন্তা করছে চীন। এ খবর দিয়েছে আল জাজিরা।

হোয়াইট হাউজকে উদ্ধৃত করে খবরে বলা হয়, ট্রাম্প ইউএস ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ (ইউএসটিআর) বা মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধির কার্যালয়কে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে প্রস্তাবিত শুল্ক আরোপ করা যায় এমন পণ্যের তালিকা তৈরির নির্দেশ দিবেন। ইউএসটিআর ইতিমধ্যেই সম্ভাব্য টার্গেট হিসেবে ৪৮০০ কোটি ডলার সমমূল্যের ১৩০০ পণ্য চিহ্নিত করে রেখেছে। এছাড়া অর্থমন্ত্রী স্টিভেন মুনচিন’কে চীনা বিনিয়োগের ওপর আরোপ করা যায় এমন নিষেধাজ্ঞার একটি তালিকা তৈরি করতেও বলেছেন ট্রাম্প। চীনের সঙ্গে ৩৭৫০০ কোটি ডলার বাণিজ্য ঘাটতির কারণে আমেরিকান কর্মসংস্থান কমেছে বলে দাবি করেন ট্রাম্প। সেদিকে ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, এটা পৃথিবীর যে কোনো দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ঘাটতি। এটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রকে শুক্রবার এমন পদক্ষেপ না নিতে আহ্বান জানিয়েছে চীন। চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, চীন বাণিজ্য যুদ্ধ চায় না। কিন্তু কোনো যুদ্ধে জড়াতে ভয়ও পায় না।  ট্রাম্পের পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় আমদানিকৃত ৩০০ কোটি সমমূল্যের মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করার চিন্তা করছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বিবৃতিতে জানায়, অর্থনৈতিক সহযোগিতাই ‘একমাত্র বিকল্প’। বাণিজ্যে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি হওয়ার আগে যেসব বিষয়ে বিরোধ আছে তা নিয়ে আলোচনা শুরুর উদ্যোগ নিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছে তারা। মার্কিন নিষেধাজ্ঞার জবাবে পাল্টা দুই স্তরের শুল্ক আরোপের পরিকল্পনার কথাও জানায় মন্ত্রণালয়। যুক্তরাষ্ট্র চীনের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তিতে উপনীত না হতে পারলে তাজা ফলমূল, বাদাম, ওয়াইনসহ ১২০টি মার্কিন পণ্যে ১৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছে তারা। এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা শুল্ক পর্যালোচনা শেষে দ্বিতীয় স্তরের পদক্ষেপ নেয়া হবে; এক্ষেত্রে বন্দর ও অ্যালুমিনিয়াম স্ক্র্যাপের মতো অন্তত ৮টি পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক বসবে।

চীনের বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপ নেয়ার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রে আমদানিকৃত ইস্পাতের ওপর ২৫ শতাংশ ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রস্তুতি নিচ্ছেন ট্রাম্প। এই শুল্ক আরোপের শিকার হবে চীনও। তবে ইউএসটিআর রবার্ট লাইঠিজার বৃহস্পতিবার বলেন, ইউরোপীয় দেশ, অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়াকে এই শুল্ক আরোপ থেকে প্রাথমিকভাবে ছাড় দেয়া হবে। তবে, লাইঠিজার জানান যে, ট্রাম্প আপাতত ওই শুল্ক আরোপ স্থগিত রাখার চিন্তা করছেন। শুল্ক আরোপ করা হবে এমন দেশের তালিকায় আরো কয়েকটি নাম যোগ করার চিন্তা করছেন তিনি। এসব দেশের সঙ্গে আলোচনা করে তারপর ঠিক করা হবে দেশগুলোর নাম তালিকায় যোগ হবে কিনা। এমন দেশের মধ্যে রয়েছে কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা ও কোরিয়া।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status