বাংলারজমিন

‘সভাপতির পদ নিশ্চিত করতেই শাওনকে হত্যা’

স্টাফ রিপোর্টার, ময়মনসিংহ থেকে

২৩ মার্চ ২০১৮, শুক্রবার, ৯:১৩ পূর্বাহ্ন

আশফাক আল রাফি শাওন ছিলেন ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি। আর সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন সঞ্জয় দত্ত। দু’জনই নতুন কমিটির সভাপতি প্রার্থী ছিলেন। সভাপতির পদ নিশ্চিত করতেই সঞ্জয় দত্ত ও তাঁর অনুসারীরা শাওনকে গুলি করে হত্যা করেছে। নিহত শাওনের বাবা এমএ কুদ্দুস আদালতে দায়ের করা মামলা এভাবেই উল্লেখ করেছেন। শাওনের মৃত্যুর ১৩ দিন পর বুধবার ময়মনসিংহের এক নম্বর আমলী আদালত ও জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মাসুদুল হকের আদালতে হত্যা মামলা করেন শাওনের বাবা এম এ কুদ্দুস। মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী পীযূষ কান্তি সরকার জানান, আদালত বাবার দায়েরকৃত মামলাটি গ্রহণ করে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার পুলিশ শাওন হত্যার ঘটনায় দায়ের মামলাটি তদন্ত কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত বাবা এম এ কুদ্দুসের করা মামলাটির কার্যক্রম স্থগিত রাখার আদেশ দেন। সেই সঙ্গে কোতোয়ালি মডেল থানার ওসিকে তদন্তের অগ্রগতির প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালতে এম এ কুদ্দুস দায়েরকৃত মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে তারা হলেন ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সঞ্জয় দত্ত (২৬), তাঁর অনুসারী এসএম আরিফুল হক (২৭), আমিনুল ইসলাম হিমেল (২৭) ও দ্বীপ্ত দত্ত (২৩)। পুলিশের করা মামলায় সঞ্জয়, আরিফ ও হিমেলের নাম থাকলেও এই মামলায় নতুন করে যোগ হলো দ্বীপ্ত দত্তের নাম। আসামিদের মধ্যে দ্বীপ্ত দত্ত ছাড়া বাকি তিনজন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বর্তমানে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ হেফাজতে আছেন।
শাওনের বাবা এম এ কুদ্দুস ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি বুধবার আদালত প্রাঙ্গণে কান্নাজড়িত কণ্ঠে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি শুধু আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে এবং প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানাব, আমার একমাত্র পুত্র সন্তানকে গুলি করে হত্যা করেছে তার বিচার চাই।’ এর বাইরে আমার কোনো কিছু নাই। আপনারা আমাকে সাহায্য সহযোগিতা করেছেন, আমি মানুষের সঙ্গে দীর্ঘদিন রাজপথে কাজ করেছি। কোনোদিন আমি কারো কোনো ক্ষতি করি নাই। আমার চরম ক্ষতি যারা করেছে তাদেরকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে যেন মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়, এটাই আমার দাবি। সব তথ্য নিয়ে মামলাটি করতে আমার দেরি হয়েছে।’
আরো তিনজন গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে: শাওন হত্যার ঘটনায় গত মঙ্গলবার ময়মনসিংহ শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আরো তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এরা হলো- ময়মনসিংহ আনন্দ মোহন কলেজের সৈয়দ নজরুল ইসলাম ছাত্রাবাস শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম (২৬), ছাত্রলীগ কর্মী নাহিদ (২৬) ও জুয়েল বাঁশফোর (২৫)। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) পলাশ কুমার রায় বুধবার তিনজনকে ময়মনসিংহের ১ নম্বর আমলী আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। বিচারক মাসুদুল হক দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে শহরের জেলা পরিষদ অফিসের সামনে শাওন গুলিবিদ্ধ হন। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হলে পরের দিন তাঁকে রাজধানীর ইবনে সিনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে ৮ই মার্চ দুপুরে ওই হাসপাতালেই মারা যান শাওন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status