দেশ বিদেশ

প্রধানমন্ত্রীর আগমন নতুন সাজে চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

১৯ মার্চ ২০১৮, সোমবার, ৯:৩৩ পূর্বাহ্ন

চট্টগ্রাম মহানগরীর দামপাড়া ওয়াসার মোড়ে ধুলোয় আবৃত ঘোড়াটি এখন চকচক করছে সাদা রঙে। কাস্টমস মোড়ে পড়ে থাকা বাংলাদেশের ১১ ক্রিকেটারের বিবর্ণ ভাস্কর্যগুলোও নীল-সবুজে জীবন্ত দেখাচ্ছে গত কয়েক দিন ধরে। নিমতলা মোড়ের জেট বিমানের রেপ্লিকাতেও পড়েছে সোনালি রঙের প্রলেপ। মেরিনার্স রোডের মিড আইল্যান্ডগুলোও দ্যুতি ছড়াচ্ছে লাল রঙের প্রলেপে। মাঝখানের বাগানে শোভা পাচ্ছে সবুজের সমারোহ। চলছে টাইগারপাসের টাইগার তিনটিও রঙিন করার কাজ। ড্রাইডকের পাশে স্থাপন করা হচ্ছে শ্রদ্ধাঞ্জলি শীর্ষক তিন ব্যক্তির ম্যুরাল। এসব হচ্ছে শুধুমাত্র চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দর সড়ক ঘিরে। কারণ আগামী ২১শে মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শাহ আমানত বিমানবন্দর থেকে এ সড়ক দিয়ে যাবেন পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠের জনসভায়। এর আগে চট্টগ্রামের নেভালসহ কয়েকটি মেগা প্রকল্প উদ্বোধন করবেন তিনি।
ফলে শুধু সড়ক নয়, সম্ভাব্য যেসব স্থানে তিনি যেতে পারেন নগরীর সেসব স্থান রঙে-রঙে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের ক্লিন ও গ্রিন সিটি কর্মসূচির আওতায় প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নান্দনিক এই সাজ-সজ্জার কাজ চলছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জয়েন্ট বিল্ডার্সকে সৌন্দর্য বর্ধনের কাজে নিয়োগ করা হয়েছে। সৌন্দর্যবর্ধনের বিষয়ে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নজর কাড়তে বিমানবন্দর সড়কের ৭, ৯ ও ১৫ নম্বর জেটি নতুন ব্রিজ, ১৫ নম্বর ব্রিজ থেকে মিড আইল্যান্ড এবং গোলচত্বর, ড্রাইডকের দেয়াল ঘেঁষে সৌন্দর্যবর্ধন ও আলোকসজ্জাসহ নান্দনিকতায় সাজানো হয়েছে।
সড়কের চারপাশের ডিভাইডারগুলোসহ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করা হচ্ছে বিভিন্ন স্থাপনায়। ড্রাইডকের দেয়ালে ফুল ও ফলের নানা চিত্র সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। দেয়ালের পাশ ঘিরে চলছে সবুজায়নের কাজ। চলছে ভাঙা রাস্তায় কার্পেটিংয়ের কাজও। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের পছন্দ করেন বেশি। তাই নগরীর কাস্টমস মোড়ে দেশের ১১ ক্রিকেটারের ম্যুরাল নীল-সবুজে রঙিন করে তোলা হয়েছে। সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোরশেদ আলম বলেন, বিমানবন্দর সড়ক, শেখ মুজিব রোড, সিআরবি, নিউমার্কেট, কোতোয়ালি ও সাগরিকাসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বিশেষভাবে পরিষ্কার করা হচ্ছে। গত এক সপ্তাহ ধরে নিয়মিত কর্মীর সঙ্গে ২০-৩০ জন অতিরিক্ত পরিচ্ছন্নকর্মী রাস্তা পরিষ্কারের কাজ করছে।
করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) সুদীপ বসাক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আগমনে মেয়রের নির্দেশ মোতাবেক বিমানবন্দর সড়কসহ পুরো শহরেই সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ চলছে। বিমানবন্দর সড়কের মিড আইল্যান্ড ও সড়কের পাশে প্রায় ৪-৫ হাজার ফুলের গাছ লাগানো হয়েছে। রুবি সিমেন্ট ক্রসিং থেকে ইপিজেড পর্যন্ত পুরো রাস্তা কার্পেটিং, পাশে পার্কিংয়ের জন্য রোড মার্কিং, বাম পাশে বাগান করা হয়েছে। ম্যুরাল স্থাপনের কাজ করছে শিল্পী শ্রীকান্ত আচার্য। তিনি বলেন, ১৪ ফুট উচ্চতা ও ১৭ ফুট দৈর্ঘ্যের দেয়ালে টাইলস ম্যুরালগুলো স্থাপন করা হবে। পাশাপাশি প্রথমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল, তারপর ৬ ইঞ্চি নিচে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, এর ৬ ইঞ্চি নিচে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের ম্যুরাল স্থাপন করা হচ্ছে। আজকের মধ্যে ম্যুরালগুলো তৈরির কাজ শেষ হবে। তিনি বলেন, ম্যুরালের নাম দেয়া হয়েছে ‘শ্রদ্ধাঞ্জলি’। আর ম্যুরালের উপরে লেখা থাকছে ওয়েলকাম টু চিটাগাং। ম্যুরাল স্থাপন করা দেয়ালটির সামনে ৩ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৭ ফুট প্রস্থের একটি বাগান তৈরির কাজ চলছে। বাগানের এক পাশ হবে নৌকা আকৃতির। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রীর চট্টগ্রাম আগমন উপলক্ষে রাস্তাঘাট পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. হাবিবুর রহমান গত ১১ই মার্চ করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী মো. সামসুদ্দোহা বরাবর চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে জানানো হয়েছে, আগামী ২১শে মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রাম জেলা সফর করবেন। এ সময় পটিয়ায় জনসভা ছাড়াও তিনি কয়েকটি মেগা প্রকল্প উদ্বোধন করবেন। সফরসূচি অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর যাতায়াতের রাস্তাসমূহ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখাসহ সাবলীল ও নির্বিঘ্নে অতিক্রম করার লক্ষ্যে জরুরিভিত্তিতে প্রয়োজনীয় মেরামত-সংস্কার কার্যক্রম গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। ফলে ভাঙা সড়কে কার্পেটিংয়ের কাজও করছে সিটি করপোরেশন। চট্টগ্রাম বিমানবন্দর সড়কের পতেঙ্গা ৯ নং ব্লকের বাসিন্দা মাসুদুল আলম খুশী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আগমনে গত ৮-৯ দিন ধরে চট্টগ্রামে সড়ক সংস্কার ও শোভাবর্ধন কাজ চলছে। যা গত ৯ বছরেও হয়নি। দুটি ব্রিজ মেরামতে সময় লেগেছে ৮ বছর। দেড় বছর আগে চট্টগ্রাম নেভাল সফরের সময় এ ব্রিজ দুটি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশের পর তড়িঘড়ি করে নির্মাণ করা হয়। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী অন্তত দুই-তিন মাস পর পর যদি চট্টগ্রাম সফরে এসে অলিগলি ঘুরতেন তাহলে বোধহয় শতভাগ উন্নয়ন ও দুর্ভোগ থেকে রেহাই পেতেন চট্টগ্রামবাসী। প্রসঙ্গত, আগামী ২১শে মার্চ বুধবার পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত জনসভায় যোগ দিতে চট্টগ্রামে আসবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এটি তার নির্বাচনী জনসভা বলে জানিয়েছেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসলেম উদ্দিন। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩ সালের ২৯শে আগস্ট চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে সর্বশেষ জনসভা করেছিলেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status