অনলাইন

ক্রিকেট রাজনীতি এবং প্রেমাদাসায় ইতিহাস বদলের প্রার্থনা

সাজেদুল হক

১৮ মার্চ ২০১৮, রবিবার, ২:০০ পূর্বাহ্ন

আপনি এটা পছন্দ নাও করতে পারেন। কিন্তু এটা সত্য। ক্রিকেটের সঙ্গে কখনো কখনো রাজনীতি জড়িয়ে যায়। সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে যতটা ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে বলা হয় ততটা অবশ্য নয়। ওয়াসিম-ওয়াকারের কথা মনে আছে। ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা বোলিং জুটি। কিন্তু পাকিস্তান ক্রিকেটে এটা সব সময়ই বিশ্বাস করা হয়, ওয়াসিমের রাজনীতির কারণে ওয়াকারকে ভুগতে হয়েছে। বলে রাখা ভালো এটা ছিল ক্রিকেট রাজনীতি। ব্যক্তি থেকে বোর্ড, বোর্ড থেকে আইসিসি পর্যন্ত বিস্তার এই রাজনীতির।
বাংলাদেশের কোন ক্রিকেটারের সঙ্গে বোর্ডের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো আর কোন ক্রিকেটারের সঙ্গে ভালো নয় তা আপনি কান পাতলেই শুনতে পাবেন। আইসিসিতে গত কয়েক বছর থেকে ভারতের আধিপত্য। তারাই এখন ক্রিকেটের বড় ভাই। ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া কখনো কখনো তাদের সঙ্গী। একটা সময় অবশ্য পরিস্থিতি এমন ছিল না। এশিয়ার দলগুলো সবসময়ই ঐক্যবদ্ধ ছিল। কিন্তু ক্রিকেট অর্থনীতির ওপর ভারতের নিয়ন্ত্রণ যত বেড়েছে এশিয়ার ক্রিকেট দলগুলোর সম্পর্ক ততটাই হালকা হয়েছে।
বিশ্বকাপে সেই ম্যাচের পর থেকেই বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ মানেই বাড়তি উত্তেজনা। সে দিন আম্পায়াররা ভারতের দিকে পক্ষপাতিত্ব করেছে বলে অভিযোগ বাংলাদেশি প্রায় সব সমর্থকেরই। দুর্বল দলগুলো সবসময়ই আম্পায়ারিং ভুলের শিকার হয় এটা বিশ্বাস করা হয়। যে কারণে আমাদেরও অনেক ভুগতে হয়েছে। যদিও এসব ভুল কতটা ইচ্ছাকৃত আর কতটা অনিচ্ছাকৃত বলা মুশকিল। যে কথা বলছিলাম, বিশ্বকাপের ওই ম্যাচের পর থেকে বাংলাদেশ-ভারত প্রতিটি ম্যাচই বারুদের উত্তেজনা ছড়িয়েছে।
শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে আবেগ এবং শ্বাসরুদ্ধকর একটি ম্যাচের পর আজ আরেকটি ফাইনালের সামনে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ম্যাচে মাহমুদুল্লাহ এটা সত্যি প্রমাণ করেছেন, অভিজ্ঞতা বাজার থেকে কেনা যায় না। দুই ভায়রা ভাই শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে দুটি ম্যাচ বাংলাদেশের জন্য বের করে এনেছেন। ভারতের বিরুদ্ধে সে ম্যাচের কথা নিশ্চয়ই তারা আজও ভুলে যাননি। শেষ ওভারে তাদের ভুলের কারণেই হেরে গিয়েছিল বাংলাদেশ। সে যন্ত্রণা বহুদিন তাড়িয়ে বেড়িয়েছে তাদের। এবার কী তারা মুক্তি পাবেন?
এর চেয়েও বড় প্রশ্ন অবশ্য বাংলাদেশের ফাইনাল ভাগ্য কী বদলাবে এবার। হৃদয় ভাঙার দীর্ঘ ইতিহাস। ক্রিকেট ইতিহাস কেউ না জানলেও এটা জানেন, বাংলাদেশ কখনো ফাইনাল জেতেনি। ঢাকার মিরপুর স্টেডিয়ামে খেলা প্রতিটি ফাইনালেই তৈরি হয়েছে একেকটি হৃদয় ভাঙার গল্প। খেলোয়াড় আর ভক্তদের অশ্রুতে ভেসে গেছে মিরপুরের সবুজ ঘাস আর স্টেডিয়াম। ২০০৯ সালে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে তীরে এসে তরী ডুবে বাংলাদেশের। শ্রীলঙ্কার হেরে যায় দুই উইকেটে। ২০১২ সালে এশিয়া কাপ ফাইনালে পাকিস্তানের কাছে হার ২ রানের। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসেরই সবচেয়ে বিয়োগান্তক ম্যাচ এটি। সাকিব-মুশফিকদের সেদিনের কান্না কোনোদিনই ভোলার নয়। ২০১৬ এর এশিয়া কাপের এবং কদিন আগের ত্রিদেশীয় ফাইনালের গল্পও একই।    
আজ কী হবে। হৃদয়ভাঙা কান্না, না বাঁধভাঙা আনন্দ। প্রার্থনায় ১৬ কোটি মানুষ। ইতিহাস বদলাক।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status