দেশ বিদেশ

পশ্চিমবঙ্গে গড়ে ওঠা বেসরকারি শিবিরে দলে দলে রোহিঙ্গারা আশ্রয় নিচ্ছে

কলকাতা প্রতিনিধি

১৮ মার্চ ২০১৮, রবিবার, ৯:৪১ পূর্বাহ্ন

পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার বারুইপুরের হাড়দহ গ্রামে বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে ওঠা রোহিঙ্গা শিবিরে বাংলাদেশ থেকে আসছেন রোহিঙ্গারা। সর্বশেষ মঙ্গলবার সীমান্ত পেরিয়ে বারুইপুরের শিবিরে এসেছেন ৮০ রোহিঙ্গার একটি দল। গত ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে ভারতের হরিয়ানা রাজ্যে আশ্রয় নেয়া ৭৯ জন রোহিঙ্গা চলে এসেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের এই বেসরকারি শিবিরে। গত ১৮ই ডিসেম্বর প্রথম ৮টি পরিবারের ২৯ জন রোহিঙ্গাকে দিয়ে এই শিবির চালু হয়েছিল। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, নদীপথ দিয়ে সুন্দরবনের সীমান্ত পথে রোহিঙ্গারা ঢুকে পড়ছেন দলে দলে। এই মুহূর্তে উত্তর ২৪ পরগণার সন্দেশখালির বিভিন্ন গ্রামে আশ্রয় দিয়েছেন অনেক রোহিঙ্গা। এদের আশ্রয় দিতে সেখানকার সরকারি জমিতে বেসরকারি উদ্যোগে আরো শিবির তৈরির কাজ চলছে বলে জানা গেছে। ভারত সরকার রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিলেও কলকাতা থেকে ৫০ কি.মি দূরে অস্থায়ী শিবির খুলে তাদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেছে ‘দেশ বাঁচাও সামাজিক কমিটি’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। এই সংস্থার কর্ণধার হোসেন গাজী বলেছেন, বাংলাদেশ সফরে গিয়ে তিনি রোহিঙ্গাদের অবস্থা দেখে এতই মর্মাহত হয়েছিলেন যে, ভারতে তাদের থাকার ব্যবস্থা তিনি নিজের উদ্যোগেই শুরু করেছেন। নিজের ১৫ কাঠা জমিতেই তৈরি হয়েছে অস্থায়ী শিবির। প্রায় দুশ’ রোহিঙ্গা এই শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে। এই শিবিরের উদ্যোক্তা হোসেন গাজী বলেছেন, বাংলাদেশের কক্সবাজারে তার অফিস রয়েছে। সেই যোগাযোগেই যে রোহিঙ্গারা বারুইপুরের শিবিরে এসেছেন সেকথা জানিয়েছেন আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারাও। শুধু বাংলাদেশেই নয় ভারতের নানা জায়গায় রোহিঙ্গাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের নিয়ে আসা হচ্ছে এই শিবিরে। হোসেন গাজীর দাবি, ৪০টির বেশি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা একজোট হয়ে এই বড় দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও সাহায্যের আবেদন জানানো হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার অবশ্য রোহিঙ্গাদের জোর করে ফেরত পাঠানোর বিরোধী। তবে দুই রোহিঙ্গা শরণার্থীর করা আবেদনের বিচার চলছে সুপ্রিম কোর্টে। এই রায় জানার পর স্পষ্ট হবে রোহিঙ্গাদের নিয়ে ভারত সরকারের নীতি। তবে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই রোহিঙ্গা শিবিরের ওপর নজর রাখছে। দক্ষিণ ২৪ পরগণার পুলিশ সুপার বলেছেন, শিবিরে আশ্রয় নেয়া প্রায় সব পরিবারেই জাতিসংঘের দেয়া সনদ রয়েছে। কিন্তু শিবিরে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের অধিকাংশই জানিয়েছেন, মিয়ানমারে তাদের ফিরে যাবার কোনো ইচ্ছে নেই। তাদের মতে, সেখানে ফিরে গেলে তাদের মেরে ফেলা হবে। ফলে শিবিরে থাকা রোহিঙ্গা পুরুষ ও মহিলারা নিজেদের চেষ্টায় কাজ যোগাড় করে নিচ্ছেন। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ায় সহযোগিতা করতে এগিয়ে এসেছে স্থানীয় ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status