এক্সক্লুসিভ
চৌমুহনী মদন মোহন স্কুলে কোটি টাকার রাজস্ব আত্মসাৎ
স্টাফ রিপোর্টার, নোয়াখালী থেকে
১৬ মার্চ ২০১৮, শুক্রবার, ৮:৪৫ পূর্বাহ্ন
নোয়াখালীর শত বছরের চৌমুহনী মদন মোহন উচ্চ বিদ্যালয়কে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আত্মসাতের অভিযোগ করেছেন বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আবু বকর ছিদ্দিক টিপু। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদুক) চেয়ারম্যান ও মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর এক আবেদনে টিপু জানান, হাজার কোটি টাকার সম্পদের ওপর প্রতিষ্ঠিত এ প্রতিষ্ঠানের বাৎসরিক আয়-ব্যয় শতকোটি টাকা। এ প্রতিষ্ঠানের একটি ৮তলা বিশিষ্ট বাণিজ্যিক ভবন রয়েছে যার প্রতি তলায় ১৫ হাজার স্কয়ার ফুট। সঙ্গে ৪তলা বিশিষ্ট আরো একটি বাণিজ্যিক ভবন রয়েছে। যা প্রতি তলায় ১০ হাজার স্কয়ার ফুট। এ বিদ্যালয়ের অফিস, অডিটোরিয়াম, কম্পিউটার ল্যাব, ক্লাসরুম এবং সভাপতির কার্যালয়সহ পাঠ্য কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে এমন ৩টি দোতলা মূল ভবন। স্কুলে ৩ হাজার ছাত্রছাত্রী রয়েছে। বিগত কয়েক বছর থেকে প্রধান শিক্ষকসহ একটি অসাধু চক্র বিদ্যালয়টিকে একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছে। ম্যানেজিং কমিটির বৈঠকে এমন সব দুর্নীতি, শিক্ষার পরিবেশ ও ফলাফল বিপর্যয় নিয়ে আলোচনার একপর্যায়ে কমিটির সভায় প্রধান শিক্ষককে আয়-ব্যয়ের হিসাব দাখিল করতে বলা হয় এবং একটি অডিট কমিটি গঠিত হয়। প্রধান শিক্ষক ১লা অক্টোবর ২০১৭ থেকে ৭ই ফেব্রুয়ারি ২০১৮ পর্যন্ত ৪ মাস ৭ দিনের আয়-ব্যয়ের হিসাব দাখিল করেন। যাতে বিদ্যালয়ের বাণিজ্যিক ভবনগুলোর আয়-ব্যয়ের কোনো হিসাব নেই। এছাড়া স্কুল ক্যাম্পাসে বিশাল বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণের কোনো দরপত্র দেননি। কোনো প্রকার প্রকল্প কমিটি করা হয়নি। বাণিজ্যিক ভবন দোকান, ফ্ল্যাট বিক্রির কোনো রকম হিসাব দাখিল করেননি এবং সরকারের রাজস্ব খাতে দোকান বিক্রি ও ফ্ল্যাট বিক্রির বিপরীতে কোনো রাজস্ব দেননি। বিধি মোতাবেক সরকারের ট্যাক্স, ভ্যাট ও রেভিনিউ দেননি। ম্যানেজিং কমিটির সদস্য টিপু অভিযোগে আরো জানান প্রধান শিক্ষক নামে বেনামে তার আত্মীয়স্বজনের নামে কয়েকটি ফ্ল্যাট ও দোকান রেজিস্ট্রি ছাড়া স্ট্যাম্পের মাধ্যমে হস্তান্তর করেন। অডিট কমিটির সদস্য উক্ত বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক নুর ইসলাম দুলাল তদন্ত রিপোর্টে জানায় লাখ লাখ টাকা আয়ের কোনো হিসাব ব্যাংক বিবরণীতে পাওয়া যায়নি। উন্নয়ন খাতের ১৮ লাখ ২৪ হাজার ৯৫৭ টাকার রেজুলেশন দেখাতে পারেননি। সিনিয়র ধর্মীয় শিক্ষক জাফর উল্যা জানান, সাড়ে ১৮ লাখ টাকা দিয়ে একটি ফ্ল্যাট স্টাম্পের মাধ্যমে কিনে বসবাস করছি। রেজিস্ট্রি করতে গেলে এত টাকা পাব কোথায়? শিক্ষক সমিতির নামে একটি ভবন ক্রয় করে আবার বিক্রয়ের পর সবাই মিলে ভাগবাটোয়ারা করি। এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রশিদ তারেক মানবজমিনকে জানান, আগামী ২৪শে মার্চ ৪ হাজার প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীর সমন্বয়ে শতবর্ষ উদ্যাপন কমিটি নিয়ে ব্যস্ত।