অনলাইন

‘আপনি কি আদালতকে থ্রেট করছেন’

স্টাফ রিপোর্টার

১৪ মার্চ ২০১৮, বুধবার, ১২:৩১ অপরাহ্ন

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন আদেশ স্থগিত চেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানিতে আসামি পক্ষের এক আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, আপনি কি আদালতকে থ্রেট দিচ্ছেন। আজ বুধবার আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানিকালে এ কথা বলেন তিনি। এর আগে বেঞ্চ খালেদা জিয়ার জামিন আগামী রোববার পর্যন্ত স্থগিত করে। শুনানির শুরুতে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান আদালতকে বলেন, হাইকোর্ট চারটি কারণ দেখিয়ে খালেদা জিয়াকে জামিন দিয়েছেন। আমরা এখনো সে আদেশের সার্টিফায়েড কপি পাইনি। আদেশের কপি পেলে লিভ টু আপিল করব।
জবাবে প্রধান বিচারপতি বলেন, আপনারা  লিভ টু আপিল করে আসেন। তখন দুদকের আইনজীবী বলেন, মাই লর্ড, হাইকোর্টের আদেশের কপি বের হয়েছে গতকাল বিকেল ৫টার পর। এ কারণে আমরা লিভ টু আপিল করতে পারিনি। লিভ টু আপিল করতে হলে আগামী রোববার-সোমবার পর্যন্ত আমাদের সময় দেয়া হোক। এ পর্যন্ত জামিন স্থগিত রাখা হোক।
এরপর আদালত বলেন, ঠিক আছে সিপি ফাইল করে আসেন রোববারের মধ্যে। এ পর্যন্ত জামিন স্টে থাকবে।
তখন খালেদা জিয়ার আইনজীবী অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন আদালতকে বলেন, আমাদের আগে শোনেন। আমাদের বক্তব্য তো শোনেন নাই। আমাদের না শুনে এভাবে আদেশ দিতে পারেন না।
আদালত বলেন, শুনতে হবে না। রোববার পর্যন্ত তো স্থগিত দিয়েছি। ওই দিন আসেন, তখন শুনব।
অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, আপনি যে একতরফাভাবে শুনানি করে আদেশ দিলেন, এতে আদালতের প্রতি পাবলিক পারসেপশন খারাপ হবে।
জবাবে প্রধান বিচারপতি বলেন, আমরা পাবলিক পারসেপশনের দিকে তাকাই না। কোর্টকে কোর্টের মতো চলতে দিন।
এরপর জয়নুল আবেদীন ও এ জে মোহাম্মদ আলী কিছুটা আওয়াজ করে আদালতে বলেন, মাই লর্ড, না শুনেই তো আদেশ দিলেন।
জবাবে আদালত বলেন, আমরা অন্তর্বতীকালীন আদেশ দিয়েছি। আমাদের শোনার দরকার নেই।
জয়নুল আবেদীন বলেন, এ মামলায় চেম্বার আদালত তো স্টে (জামিন স্থগিত) দেয়নি। এ সময়ের মধ্যে আসামিও বের হবেন  না। তাই স্টে (স্থগিত) প্রয়োজন নেই।
খালেদা জিয়ার অপর আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী  আদালতকে বলেন, আমরা তো শুনানির সুযোগ পেলাম না। এসময় প্রধান বিচারপতি কার্যতালিকা থেকে অন্য মামলা শুনানি শুরু  করতে বলেন। পরে খালেদা জিয়ার আরেক আইনজীবী গিয়াস উদ্দিন আহমদ দাঁড়িয়ে আদালতকে বলেন, আপনি তো না শুনেই একতরফা আদেশ দিলেন। আমাদের কথা শুনতে হবে। কেন শুনবেন না?
তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, কার কথা শুনব, কার কথা শুনব না তা কি আপনার কাছে শুনতে হবে? এ সময় আইনজীবী গিয়াস উদ্দিন উত্তেজিত হয়ে বলেন, আপনি আমাদের না শুনে একতরফা শুনানি করে আদেশ দিতে পারেন না। এটা নজিরবিহীন। জবাবে আদালত বলেন, আপনি কি আদালতকে থ্রেট করছেন? গিয়াস উদ্দিন বলেন, শুনে তারপর আদেশ দিতে হবে। তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, থ্রেট দেবেন না। এরপর আইনজীবী গিয়াস উদ্দিন বলেন, আপনি আমাদের শুনে অর্ডার দেন, প্লিজ? এরপর বিএনপির অর্ধশতাধিক আইনজীবী আদালতে দাঁড়িয়ে হৈচৈ শুরু করেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status