দেশ বিদেশ

'বিএনপিতে ভাঙন ধরাতে অপপ্রচার চালাচ্ছে সরকার'

স্টাফ রিপোর্টার

১৪ মার্চ ২০১৮, বুধবার, ৮:১০ পূর্বাহ্ন

বিএনপিতে ভাঙন ধরাতে সরকার নানা কৌশলে অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, আমাদের বিরুদ্ধে চতুর্দিক থেকে ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে সরকার। পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি করাচ্ছে। ফেসবুকে দেখবেন, দলে ভাঙন ধরাতে আমাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম অপপ্রচার চালাচ্ছে। কিন্তু আমি বলতে চাইÑ জনগণের শক্তিকে ভয় পাচ্ছে বলেই আজকে তারা বিভিন্ন কৌশল আমাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে চাইছে, অপপ্রচার চালাচ্ছে। এতে লাভ হবে না। আমাদের দেশে একটা কথা আছেÑ শকুনের দোয়ায় গরু মরে না। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের মুক্তির দাবিতে মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। মির্জা আলমগীর বলেন, কেউ সরতে চায় না, ক্ষমতা দখল করে রাখে। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ বারবার এই সমস্ত শক্তিকে, ব্যক্তিদের, যারা জোর করে ক্ষমতা ধরে রাখতে চায় তাদের টেনে হিচড়েই নামিয়ে ফেলেছে। আপনারা (সরকার) বিএনপি চেয়ারপারসনকে ছলচাতুরী করে আটকে রাখার চেষ্টা করছেন। কিন্তু কেন? ভয়ে। এত ভয় পান যে খালেদা জিয়া যদি আজকে বের হন আপনাদের মসনদ জনগণের স্রোতে ভেসে যাবে। এই কারণেই আপনারা তাকে আটকে রেখেছেন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, অনেকে প্রশ্ন করেনÑ আপনারা এই শান্তিপুর্ণ করছেন, লাভ কী হচ্ছে? আমি বলতে চাই, এটাই একামাত্র পথ। শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মধ্যদিয়ে জনগণের সসম্পৃক্ততা নিয়ে এসে যে আন্দোলন, সে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পথেই আন্দোলনে সফলতা আসবে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথের সেই আন্দোলনকে সরকার ভয় পাচ্ছে। বিএনপির মহাসচিব বলেন, আলোচনা করার সময় শেষ হয়ে গেছে, এখন প্রতিবাদ করার সময়। গণতন্ত্রের মা খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ৩৬টি মামলা দেয়া হয়েছে। কিছু মামলা দেয়া হয়েছিল ওয়ান-ইলেভেনের সময়। তখন উদ্দেশ্য ছিল বিরাজনীতিকরণ। সুযোগসন্ধানী যারা গণতন্ত্রকে চলতে দিতে চায় না, তারাই এসব মামলা করেছিল। মির্জা আলমগীর বলেন, পাকিস্তানের সময়ই বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে এসব শুরু হয়েছে। যে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের জন্য যুদ্ধ করেছে, দলটির প্রতিষ্ঠাতা মওলানা হামিদ খান ভাসানী থেকে শুরু করে শেখ মুজিব পর্যন্ত গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন। সেই দলটি দেশ স্বাধীনের পর গণতন্ত্র হত্যা করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা বাকশাল কায়েম করেছিল। সে সময় বিরোধী নেতাকর্মীদের গুম, খুন ও কারাগারে নেয়া হয়েছে। বর্তমানে সেই দলটি বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গুম-খুন করে যাচ্ছে। কয়েকদিন আগে মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে গ্রেপ্তারের পর রিমা-ে নিয়ে নির্যাতনের মাধ্যমে ছাত্রদল নেতা জাকির হোসেন মিলনকে হত্যা করা হয়েছে। তিন দিন রিমান্ডে নিয়ে তারা (গোয়েন্দা পুলিশ) কী করল যে জাকির লাশ হয়ে ফিরল! গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে জীবন দিতে হলো মিলনকে। এ রকম বহু মিলন জীবন দিয়েছে এবং নিখোঁজ রয়েছেন। এখন তো দেশে কোনো আইন নেই। তাই বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ রাজবন্দিদের মুক্তি কার কাছে চাইব? আমাদের পথ একটাইÑতা হলো রাজপথ। সেই রাজপথের মধ্যে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা সব সমস্যার সমাধান করব বলে আমি বিশ্বাস করি। এটা আলোচনা সভা না হয়ে প্রতিবাদ সভা হলে খুশি হতাম। এখন প্রতিবাদ করারই সময়। আলোচনা করার সময় বোধ হয় শেষ হয়ে গেছে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, এদের দয়া নেই, মায়া নেই। এরা নৃশংসতম বর্বরতম শাসকগোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছে। এদের কাছে মনুষ্যত্ব জীবন প্রাণের কোনো মূল্য নেই। আপনারা দেখেছেন, সেদিন ছাত্রনেতা মিজানুর রহমান রাজ বাঁচার জন্য আমাকে আঁকড়ে ধরেছিল। আমি সারা রাত ঘুমাতে পারিনি। আমি ছেলেটাকে রক্ষা করতে পারিনি। এটা আমার ব্যর্থতা। আজকে এই ক্ষোভ-ব্যথা-যন্ত্রণাকে শক্তিতে পরিণত করুন। সংগঠনের আহ্বায়ক গৌতম চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে ও অমলেশ দাস অপুর পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা প্রফেসর ড. সুকোমল বড়–য়া, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা জয়ন্ত কুমার কু-, জন গোমেজ, অপর্ণা রায়, নিপুন রায় চৌধুরী, সুশীল বড়–য়া, দেবাশীষ রায় মধু ও জয়দেব জয় বক্তব্য দেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status