বাংলারজমিন
দুধের খামার করে স্বাবলম্বী
ওমর ফারুক সুমন, হালুয়াঘাট (ময়মনসিংহ) থেকে
১৪ মার্চ ২০১৮, বুধবার, ৭:৫০ পূর্বাহ্ন
হালুয়াঘাট উপজেলার চুয়ান্নহাজার গ্রাম দুধের খামার করে স্বাবলম্বী হয়েছে। উক্ত গ্রামটি দুগ্ধ খামারের গ্রাম নামেই সকলের কাছে পরিচিত হয়ে আসছে। এই গ্রামে গড়ে ওঠেছে ছোট-বড় উন্নত ফ্রিজিয়ান জাতের প্রায় ৪০-৫০টি গাভীর দুগ্ধ খামার। এক একটি খামারে রয়েছে ৪ থেকে ১০টি দুগ্ধ উৎপাদনকারী গাভী। প্রতিটি গাভীর বাজারমূল্য ২ থেকে ৩ লাখ টাকা। খামার করে তারা হয়েছে স্বাবলম্বী। হালুয়াঘাট উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দক্ষিণে নাগলার চুয়ান্নহাজার নামে গ্রামটি। গতকাল সরজমিন এই দুগ্ধ খামারের গ্রাম থেকে ঘুরে এসে দেখা যায় নানা চমকপ্রদ তথ্য। গ্রামটি আয়তনে ছোট ও অনেকটা মফস্বল এলাকা হিসেবেও পরিচিত। শিক্ষার হারও তুলনামূলকভাবে কম। খামারিদের আলাদা কোনো প্রশিক্ষণও নেই। সম্পূর্ণ নিজেদের উদ্যোগ ও মেধা খাটিয়েই গড়ে তুলেছে এইসব দুগ্ধ খামার। মোস্তফা কামাল (৪০) নামে এক খামারি জানান, তার খামারে রয়েছে ৪টি উন্নত ফ্রিজিয়ান জাতের গাভী। তার একাডেমিক কোনো খামারের প্রশিক্ষণ নেই। একটি মাত্র গাভীর বাচ্চা দিয়ে পাঁচ বছর পূর্বে শুরু করেছিলেন তার খামারের যাত্রা। আজ সে ১০ লক্ষাধিক টাকার গাভীর মালিক। একইভাবে ফজলুল হক খোকা (৬০) তার খামারে রয়েছে ৫টি, মোশারফ (৩৫)-এর ৪টি, মশিউর (২৫)-এর ৪টি, এবাদুল ইসলাম (৫৪)-এর ৭টি, হাফিজুল (৪০), মো. সুলতান মিয়া (৩৫), জুবায়ের (১৬), শফিকুল ইসলাম (৩২), আলী আকবর (৫০), নুরুদ্দিন (৫৫), নেওয়াজ আলী (৪৮), নাজিম উদ্দিন (৩৫), মুক্তার উদ্দিন (৬৫), বিল্লাল (৪০), খালেক (৫৫), ইবান আলী (২২), ফয়েজুর রহমান (৩৫) এদের প্রত্যেকের খামারে ফ্রিজিয়ান জাতের ৪-১০টি করে দুগ্ধ উৎপাদনকারী গাভী রয়েছে। এর বাইরেও পুরো গ্রামে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে আরো অনেক খামার। তাই এই গ্রামটি দুগ্ধ খামারের গ্রাম হিসেবেই পরিচিতি লাভ করছে। ফজলুল হক খোকা নামে এক খামারি জানান, মাত্র ১৫ হাজার টাকা দিয়ে একটি বাছুর কিনে তার খামারের যাত্রা শুরু। এখন সে প্রায় ১০ লক্ষাধিক টাকার মালিক। তবে দুধের বর্তমান বাজার খুবই কম। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, দুধ বিক্রির জায়গা নেই। এখন খামার ছেড়ে দিতে মন চায়। খামারি এবাদুল ইসলাম ও হাফিজুল জানান, বর্তমানে খামার করার পরিবেশ নেই। দুধের বাজার একেবারেই কম। দুধ নিয়ে বাজারে বিক্রি করতে গেলে ৩০-৩৫ টাকা কেজি বিক্রি করতে হয়। তাই তারা আশেপাশের চা দোকানগুলোতেই ৪০-৪৫ টাকা কেজি দরে দুধ বিক্রি করে থাকেন। দুগ্ধ খামারে গাভীর খাদ্য বিক্রেতা মো. মনিরুল ইসলাম মনির জানান, এই সব খামারিরা ব্যাংক থেকে কোনো ঋণের সুবিধা পান না।
যদি তাদেরকে খামারের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা সহ সহজ শর্তে ব্যাংক থেকে ঋণের সুবিধা দেয়া যেত তাহলে আরো তাড়াতাড়ি খামারগুলো আরো বিস্তার লাভ করতে পারতো। খামারিদের প্রত্যেকের দাবি তাদের জন্য সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করা। এ জন্য সরকারের শুভ দৃষ্টি কামনা করেছেন তারা।
যদি তাদেরকে খামারের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা সহ সহজ শর্তে ব্যাংক থেকে ঋণের সুবিধা দেয়া যেত তাহলে আরো তাড়াতাড়ি খামারগুলো আরো বিস্তার লাভ করতে পারতো। খামারিদের প্রত্যেকের দাবি তাদের জন্য সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করা। এ জন্য সরকারের শুভ দৃষ্টি কামনা করেছেন তারা।