বিশ্বজমিন

পশ্চিমাদের সমালোচনায় চীনা মিডিয়া

মানবজমিন ডেস্ক

১২ মার্চ ২০১৮, সোমবার, ১২:৩৮ অপরাহ্ন

আজীবন প্রেসিডেন্ট হওয়ায় পশ্চিমা বিশ্বের যারা চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সমালোচনা করেছেন তাদেরকে এক হাত নিয়েছে চীনা মিডিয়া। চীনের প্রায় সব পত্রিকাই এমন সমালোচনাকে লজ্জাজনক ও বিদ্বেষপরায়ণতা বলে আখ্যায়িত করেছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন দ্য গার্ডিয়ান। রোববার চীনের সংবিধান সংশোধন করে প্রেসিডেন্টের জন্য নির্ধারিত সময়সীমার মেয়াদ বাতিল করা হয়। এর ফলে আজীবন প্রেসিডেন্ট থাকার বৈধতা পান শি জিনপিং। সংবিধান সংশোধন করে এভাবে এক ব্যক্তির হাতে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার সমালোচনা উঠেছে পশ্চিমা দুনিয়ায়। তাদের বিষয়ে চীনের পত্রিকাগুলো বলছে, ওই সব পশ্চিমা সমালোচক নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করে। তাদের এমন দৃষ্টিভঙ্গি লজ্জাজনক। রোববারের একদিন পরে অর্থাৎ সোমবার এসব পশ্চিমা বা বিদেশী সমালোচকের কড়া সমালোচনা করেছে চীনের পত্রিকাগুলো। চীনের ইংরেজি ভাষার পত্রিকা চায়না ডেইলি তার সম্পাদকীয়তে লিখেছেন, চীনের রাজনৈতিক ব্যবস্থা নিয়ে খারাপ খারাপ কথা বলা পশ্চিমাদের এরই মধ্যে অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। যখনই চীন প্রসঙ্গ আসে তখনই তারা ঘোলা চশমায় তাকান সেদিকে। রাষ্ট্র পরিচালিত, বেইজিংয়ের আন্তর্জাতিক এক মুখপত্রে দাবি করা হয়েছে, বেশির ভাগ নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষক মনে করেন প্রেসিডেন্টের সীমাবদ্ধ মেয়াদ বাতিল করার অর্থ এই নয় যে, কোন নেতা আজীবন প্রেসিডেন্ট থাকবেন। এতে বলা হয়, এক্ষেত্রে পশ্চিমা কিছু মানুষ বিষয়টাকে দেখে অন্যভাবে। তারা চীনের বাস্তবতাকে অবজ্ঞা করে। তারা নিচু মনোভাব পোষণ করে। তারা চীনের রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রতি বিদ্বেষমুলক মনোভাব পোষণ করে। এটা তাদের আদর্শগত অযৌক্তিক, আত্মবাদী ও অপেশাদারসুলভ আচরণ। মিথ্যা কথা বলার কারণে তাদের অনুশোচনা হয় না। তাই এসব নিয়ে এত নির্লজ্জভাবে কথা বলে। কমিউনিস্ট পার্টি পরিচালিত পত্রিকা দ্য গ্লোবাল টাইমস পশ্চিমা সমালোচকদের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে। বলেছে, তারা চীনকে অযাচিত পরামর্শ দিয়ে পশ্চাৎধাবনে পছন্দ করেন। দ্য গ্লোবাল টাইমসের সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, আমরা বেশি বেশি আত্মবিশ্বাসী। দৃঢ় নেতৃত্বের কাছে ক্ষমতা থাকার ভিতরেই চীনের মূল পথ লুকিয়ে আছে। দলের কেন্দ্রীয় অংশে যারা থাকবেন তাদের সঙ্গে মূল স্থানে থাকবেন শি জিনপিং।
উল্লেখ্য, রোববার বিকালে ভোটের মাধ্যমে বেইজিং শি জিনপিংকে চীনের আজীবন প্রেসিডেন্ট থাকার বৈধতা দেয়। ওই ভোটে দেশটির ১৪০ কোটি মানুষের হয়ে সংবিধান সংশোধনের পক্ষে ভোট দেন ২৯৬৪ জন ডেলিগেট। এতে দেশের নাগরিকদের সরাসরি অংশগ্রহণ ছিল না। ওই ভোটের মাধ্যমে শি জিনপিংয়ের প্রতি প্রায় সর্বসম্মত সমর্থন দেয়া হয়। ভোটের পর একজন আইন প্রণেতা শেণ চুনাও এর পক্ষে সমর্থন প্রকাশ করেন। এই ভোটের মাধ্যমে চীন এক ব্যক্তির শাসনে যাচ্ছে। এতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তাল হয়ে পড়বেÑ এমন সমালোচনাকে প্রত্যাখ্যান করেছেন শেন চুনিয়াও। তবে পশ্চিমা বিশ্লেষকরা মনে করছেন শি জিনপিংকে এত বিশাল ক্ষমতা দেয়া হলো চীনের রাজনৈতিক ব্যবস্থার মৃত্যু। এর মধ্য দিয়ে সমন্বিত নেতৃত্বের মধ্য দিয়ে দেশ পরিচালিত হওয়ার সুযোগের ইতি ঘটেছে। আর চীন পরিচালিত হবে এক ব্যক্তির শাসনে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের উপ সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও চীনা এক বিশেষজ্ঞ সুসান শিরক বলেছেন, শি জিনপিংয়ের অধীনে চীন উল্টোপথে যাত্রা করেছে। সেখানে ফিরে এসেছে ব্যক্তির শাসন।
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status