দেশ বিদেশ

রাজধানীর প্রতিটি থানায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি

স্টাফ রিপোর্টার

১১ মার্চ ২০১৮, রবিবার, ৯:৪৪ পূর্বাহ্ন

রাজধানীর প্রতিটি থানায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি। খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশের বাধা এবং দলীয় নেতাকর্মীদের আটকের প্রতিবাদে গতকাল এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। বিক্ষোভের অংশ হিসেবে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন নেতাকর্মী সকাল সাড়ে ৬টার দিকে একটি ঝটিকা মিছিল করে নয়াপল্টনে। নয়াপল্টনে পুলিশের উপস্থিতির আগেই কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে মিছিলটি বিজয়নগর নাইটিঙ্গেল মোড় হয়ে নয়াপল্টন গিয়ে শেষ হয়। মিছিল শেষে রিজভী আহমেদ গ্রেপ্তার এড়াতে দ্রুত কার্যালয়ে ঢুকে পড়েন। এ ব্যাপারে রিজভী আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপি যাতে কোনো কর্মসূচি পালন করতে না পারে তাই আমাদের নেতাকর্মীদের গণহারে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। সরকারের এমন স্বৈরাচারী ও ন্যক্কারজনক কার্যক্রমের প্রতিবাদে সারা দেশে আজ বিক্ষোভ পালিত হচ্ছে। আমার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে। তাই সকালেই কার্যালয় থেকে বেরিয়ে কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছি। উল্লেখ্য, দীর্ঘ ৪০ দিন ধরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অবস্থান করছেন তিনি। ওদিকে পুলিশি বাধার মধ্যেও রাজধানীর বিভিন্ন থানায় থানায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। কর্মসূচি চলাকালে নানা জায়গায় পুলিশের হামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ ১৪-১৫ জন আহত হন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এমএ হান্নানের নেতৃত্বে শাহবাগ থানা বিএনপির বিক্ষোভ মিছিলটি মুক্তাঙ্গন থেকে গুলিস্তান সিনেমা হলের সামনে গেলে পুলিশি হামলায় ছত্রবঙ্গ হয়ে যায়। এছাড়া আবুল হাসান তালুকদার ননী ও সহসাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান সাইদের নেতৃত্বে শাহবাগ, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহসভাপতি ইউনুস মৃধার নেতৃত্বে খিলগাঁওয়ে, হাজী সোলায়মান আলীর নেতৃত্বে মতিঝিল, হুমায়ুন কবির ও আব্দুল মোতালেব রুবেলে নেতৃত্বে রমনা, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক খতীবুর রহমান খোকনের নেতৃত্বে চকবাজার, মিজানুর রহমান ভাণ্ডারী ও আনোয়ার সরদারের নেতৃত্বে যাত্রাবাড়ী, হাজী মনির হোসেন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে কামরাঙ্গীর চর, তানভীর আহম্মেদ রবিনের নেতৃত্বে শ্যামপুর ও কদমতলী, মকবুল হোসেনের নেতৃত্বে নিউমার্কেট, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আবদুস সাত্তারের নেতৃত্বে সূত্রাপুর, গোলাম মোস্তফা সেলিম ও মাহফুজুর রহমান মনার নেতৃত্বে ওয়ারী, আ ন ম সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে শ্যামপুর, মোজাম্মেল হোসেন ও আবুল হোসেনের নেতৃত্বে ডেমরা, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহ-সভাপতি সিরাজুল ইসলাম সিরাজের নেতৃত্বে কলাবাগান, মোল্লা সাইফুলের নেতৃত্বে কোতোয়ালি থানা বিএনপি বিক্ষোভ মিছিল করেছে। অন্যদিকে মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক এজিএম সামসুল হকের নেতৃত্বে বাড্ডা, কমিশনার মোহাম্মদ সাজ্জাদ ও বুলবুল মল্লিকের নেতৃত্বে পল্লবী, মহানগর উত্তর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার ও এল রহমানের নেতৃত্বে তেজগাঁও, মহানগর সহ-সভাপতি আতিকুল ইসলাম মতিনের নেতৃত্বে মোহাম্মদপুর, মহানগর উত্তর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রহমানের নেতৃত্বে মোহাম্মদপুর, মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক নাসির জুলহাস পারভেজের নেতৃত্বে বিমানবন্দর, আব্দুল আউয়াল ও ইঞ্জি. মজিবুল হকের নেতৃত্বে রূপনগর, আলী আকবর আলীর নেতৃত্বে দক্ষিণখান, সিরাজুল ইসলাম সিরাজ ও শাহ আলমের নেতৃত্বে শেরেবাংলানগর, মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন মতির নেতৃত্বে কাফরুল, মহানগর উত্তর বিএনপির সহসভাপতি ফেরদৌসী আহমেদ মিষ্টির নেতৃত্বে শাহআলী থানা ও মিরপুর, হাজী ফজলুল হক ফজলুর নেতৃত্বে খিলক্ষেত থানা বিএনপির নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করে। তবে পুলিশী বাধায় মোহাম্মদপুর, দক্ষিণখান, শেরেবাংলানগর, রামপুরা, খিলক্ষেত, ভাষানটেক ও ক্যান্টনমেন্ট, উত্তরা পূর্ব, উত্তরা পশ্চিম, উত্তরখান থানা বিএনপির বিক্ষোভ মিছিলগুলো পণ্ড হয়েছে। এসময় ২৩নং ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক হানিফ উদ্দিন হিমুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ক্ষমতাসীনদের বিজয়ী ঘোষণা করে দিলেই পারে ইসি: রিজভী
সব দলের অংশগ্রহণের জন্য নতুন কোনো উদ্যোগ নেয়া হবে না বলে সিইসির দেয়া বক্তব্যের সমালোচনা করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ বলেছেন, তাহলে কি কমিশন একতরফা নির্বাচনের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে? যদি তাই হয়, নির্বাচন নির্বাচন জিকিরের তো দরকার নেই। শিডিউল ঘোষণা করে পরের দিনেই ক্ষমতাসীন দলকে বিজয়ী ঘোষণা করলেই পারেন। গতকাল দুপুরে দলের নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। রিজভী বলেন, নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন দল যে অনাচার শুরু করেছে সে বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিশ্চুপ। প্রধানমন্ত্রী সরকারি খরচে হেলিকপ্টারে দেশের বিভিন্ন এলাকায় নৌকা মার্কায় ভোট চেয়ে বেড়াচ্ছেন, আর কমিশন দেখেও না দেখার ভান করছে। তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনে সব দলকে সমান সুযোগ ও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। কিন্তু সিইসির বক্তব্য ও আচরণে মনে হচ্ছে না তিনি অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন করতে আগ্রহী। তিনি মালিক পক্ষের অনুগত থেকে স্বার্থরক্ষা করতেই যেন উঠেপড়ে লেগেছেন। রিজভী বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কারামুক্তি ও নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের দাবি পূরণ হলেই নির্বাচনের মাঠ সমতল হবে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন ও সরকার সেদিকে কোনো দৃষ্টি দিচ্ছে না। এখন সিইসি যদি শেখ হাসিনার দুর্বিনীত দুঃশাসনকে প্রলম্বিত করতে ভোটারবিহীন একতরফা নির্বাচনের দিকে এগিয়ে, যায় তাহলে দেশে চরম অরাজকতা তৈরি হবে। আর এজন্য দায়ী থাকবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচির অনুমতি নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে তাকে ‘বেসামাল মিথ্যাবাদী’ আখ্যায়িত করেছেন বিএনপির মুখপাত্র। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ উপস্থিত ছিলেন।
অনুমতি মেলেনি, তবুও জনসভার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি
খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ১২ই মার্চ রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পূর্বঘোষিত জনসভা আয়োজনে এখনও অনুমতি পায়নি বিএনপি। পুলিশের অনুমতি না পেলেও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভায় ব্যাপক লোক সমাগমের প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটি। গতকাল দুপুরে দলের নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ জানান, শনিবার দুপুর পর্যন্ত পুলিশের অনুমতি পাওয়া যায়নি। জনসভার ব্যাপারে আমরা এখনও কিছু জানি না। দেখা যাক, আজ ও কালকের দিন আছে। যখনই তারা (পুলিশ) বলবে, আমাদের সব প্রস্তুতি রেখেছি। মানুষের বিশাল ঢল হবে এই জনসভায়। উল্লেখ্য, খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় ঢাকাসহ বিভাগীয় শহরে জনসভা করছে বিএনপি। খুলনার হাদিস পার্কে বিএনপির পূর্বঘোষিত জনসভাকে কেন্দ্র করে সেখানে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছিল পুলিশ। তবে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে খুলনা মহানগর বিএনপি কার্যালয়ের সামনেই জনসভা করেছেন। আগামী ১৫ই মার্চ চট্টগ্রাম ও ৩১শে মার্র্চ রাজশাহীতে জনসভা হবে। অন্য শহরগুলোতেও স্থানীয় নেতারা বসে দিন ঠিক করবেন।
খালেদা জিয়ার মুক্তিতেই গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে: ফারুক
খালেদা জিয়ার কারামুক্তিতেই দেশে একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক। তিনি বলেছেন, আজকে বাংলাদেশে যে অবস্থা চলছে সেই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি অপরিহার্য। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ লেবার পার্টি (একাংশ) আয়োজিত এক মানববন্ধনে এসব কথা বলেন। ফারুক বলেন, আমরা চাই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি ও আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমেই খালেদা জিয়া মুক্তি পান। যার মধ্য দিয়ে দেশে আরেকবার লুণ্ঠিত গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশের মানুষের কথা বলার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। আমরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে কথা বলা ও জনসভা করার অধিকার ফিরে পাব। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে সরকার উস্কানি দিচ্ছে। এই অবস্থা পরিবর্তনে এই মুহূর্তে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সব দলের অংশগ্রহণে জাতীয় নির্বাচন প্রয়োজন। যেখানে দেশের জনগণ ভোট দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত করবে। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে। আয়োজক সংগঠনের চেয়ারম্যান ইমদাদুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, তথ্য ও গবেষণা সহসম্পাদক কাদের গণি চৌধুরী, বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া ও লেবার পার্টি (একাংশের) মহাসচিব হামদুল্লাহ আল মেহেদী বক্তব্য দেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status