বাংলারজমিন

নাসিরনগর উপনির্বাচন ফুরফুরে জাপা শঙ্কায় আওয়ামী লীগ

জাবেদ রহিম বিজন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে

১১ মার্চ ২০১৮, রবিবার, ৮:৪৪ পূর্বাহ্ন

দুদিন পরেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনের উপ-নির্বাচন। ভোটের মাঠে বিএনপির প্রার্থী না থাকায় শুরু হয়েছে নানা হিসাব-নিকাশ। ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন জাতীয় পার্টির নেতারা। তারা দাবি করছেন- লাঙলের পক্ষে এসেছে জোয়ার। তবে জাপার এমন প্রচারণাকে ‘অহেতুক’ কথাবার্তা বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী বিএম ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম। তিনি বলেন, তারা ইচ্ছে করে এ প্রচারণা চালাচ্ছে। এদিকে ১৩ই মার্চ ভোটগ্রহণের আগে শনিবার শেষ হয় আনুষ্ঠানিক প্রচারণা। আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীর পক্ষে শো-ডাউন হয় উপজেলা সদরে। আওয়ামী লীগের সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম। আর জাতীয় পার্টির সভায় ছিলেন দলের কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও ইসলামী ঐক্যজোট প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হচ্ছেন আওয়ামী লীগের বিএম ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম, জাতীয় পার্টির রেজুয়ান আহমেদ এবং ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা একেএম আশরাফুল হক। তবে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীর মধ্যে। শুধু প্রতিদ্বন্দ্বিতা নয় জাতীয় পার্টি আসনটি জয়ের স্বপ্নও দেখছে। নানা কারণে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী তারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা জাতীয় পার্টির দায়িত্বশীল এক নেতা বলেন, বিএনপি নির্বাচনে না আসায় তারা পুরোপুরি সমর্থন দিয়েছে আমাদের। বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে বিএনপির নেতা-কর্মী-সমর্থকরা লাঙলের পক্ষে মিছিল-প্রচারণায় যোগ দেন। তাছাড়া নাসিরনগর আওয়ামী লীগের একটি অংশ আমাদের সমর্থন করে। প্রচারণার শুরু থেকেই আওয়ামী লীগের জেলার নেতারা ছিলেন নিষ্ক্রিয়। তাছাড়া প্রয়াত সংসদ সদস্য ছায়েদুল হকের পরিবারের সদস্যরাও লাঙ্গলের নির্বাচন করে। ফলে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বেকায়দায় রয়েছে বলে দাবি করেন জাতীয় পার্টির এই নেতা। স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে, জাপার সাংগঠনিক শক্তি এখন খুবই দুর্বল, ক্ষীণকায়। উপ-নির্বাচনের প্রার্থী রেজুওয়ান আহমেদ এর আগে ২০০৮ সালে জাতীয় পার্টি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচন করেন। তখন পেয়েছিলেন প্রায় ১৩ হাজার ভোট। বর্তমানে রেজুওয়ান আহমেদ শারীরিকভাবে খুবই অসুস্থ। তিনি আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সঙ্গে গণসংযোগের পাল্লায় অনেক পিছিয়ে ছিলেন পুরো প্রচারণাতেই। অন্য দলের ভোটে জয় পাওয়ার বিষয়টি রেজুওয়ান আহমেদের বক্তব্যে স্পষ্ট। তিনি বলেন, রংপুরের মতো ফল হবে এখানে। বিএনপির ভোট দেয়ার জায়গা কোথায়? তারা আমাকেই ভোট দেবে। তাছাড়া আওয়ামী লীগের বিভেদও প্লাস পয়েন্ট হয়েছে আমাদের জন্য। জাতীয় পার্টি ফুরফুরে অবস্থায় আর আওয়ামী লীগ অন্তর্ঘাত শঙ্কায়- এমন আলোচনা ভরে আছে লড়াইয়ের হিসেবে। আওয়ামী লীগের শঙ্কার কারণও আছে অনেক। বিভেদের কারণে দলের একটি পক্ষের ওপর আস্থা নেই আওয়ামী লীগের সাধারণ সমর্থকদের। তারা সাবোটাজ করেন কি না সেটাই ভয় তাদের। উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন ১৩ জন। এর মধ্যে ছায়েদুল হকবিরোধী ১১ জন জোটবদ্ধ হন দলের মনোনয়ন তাদের মধ্যে থেকে কাউকে দেয়ার জন্য। যার নেতৃত্বে ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এটিএম মনিরুজ্জামান সরকার। তবে নিশ্চিত করেই বলা হচ্ছিল ছায়েদুল হক পত্নী দিলশাদ আরা মনোনয়ন পাবেন। শেষ পর্যন্ত ১১ জনের কারো ভাগ্যে মনোনয়ন জোটেনি। মনোনয়ন পাননি ছায়েদুল হক পত্নীও। মনোনয়ন দেয়া হয় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সহসম্পাদক বিএম ফরহাদ হোসেন সংগ্রামকে। এরপরই শুরু হয় নতুন হিসাব-নিকাশ। ভোটের মাঠে আড়ালে-প্রকাশ্যে জমে ওঠে খেলা। ছায়েদুল হক পত্নী সমর্থন দেন সংগ্রামকে। কিন্তু প্রচারণায় সরাসরি মাঠে নামেননি তিনি। আবার তাকে মনোনয়ন না দেয়ায় বেঁকে বসেন ছায়েদুল হকের পরিবারের লোকজন। এ নিয়ে মনিরুজ্জামানের সঙ্গে প্রার্থীর সমর্থকদের বাকবিতণ্ডাও হয়। এরপর গত ২৮শে ফেব্রুয়ারি নাসিরনগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা হয়। এই সভার পর দলের বিরোধ ঘুচে গেছে বলে দাবি করেন আওয়ামী লীগের নেতারা।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status