এক্সক্লুসিভ
তা রু ণ্যে র প রা ম র্শ
ক্যারিয়ারের পাশাপাশি গুরুত্ব দিন বন্ধুত্বকেও
নাজমুস সাদাত পারভেজ
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, শুক্রবার, ৯:০৬ পূর্বাহ্ন
মানুষের জীবনে বন্ধুত্বের গুরুত্ব অপরিসীম। জীবনে চলার পথে বন্ধু লাগেই। এমনকি সফল ক্যারিয়ার গঠনেও সুন্দর, সুষ্ঠু বন্ধুত্বের তাৎপর্য অনেক। এ কথা মৌলিক গবেষণায় প্রমাণিত। তবে, অনেকেই শুধু ক্যারিয়ারের পেছনে ছুটতে গিয়ে ভুলে যান বন্ধুদের কথা। থামিয়ে দেন যোগাযোগ। মনোবিদরা বলেন, মানবজীবনে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বের সমপর্ক থাকা জরুরি। মনোদৈহিক সুস্বাস্থ্যের জন্য নিখাদ বন্ধুতার কোনো বিকল্প নেই। গবেষণাতেও এটা প্রমাণিত যে, বন্ধুত্বের সমপর্ক সুস্থ রাখে দেহ মন দুই-ই। তবে বর্তমানের এই গতিশীল জীবনধারায় তরুণ উচ্চাকাঙ্ক্ষী পেশাজীবীদের জন্য বন্ধুত্বের সমপর্ক ও দাবি ঠিক রেখে চলা একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেককেই দেখা যায়, বন্ধুদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছেন। এর ফলে মনে তৈরি হচ্ছে প্রবল দুঃখবোধ। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ১৩০০ মানুষের ওপর পাঁচটি পৃথক গবেষণায় পাওয়া গেছে যে, মানবমনের সবচেয়ে গভীর পরিতাপ বা আফসোসের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে সমপর্ক এবং ক্যারিয়ার সংক্রান্ত হতাশা। এর মধ্যে মানুষ ক্যারিয়ারের চাইতেও সমপর্ক সংক্রান্ত পরিতাপে বেশি ভোগে। আর মানবিক সমপর্কগুলোর মধ্যে একদম প্রথম দিককার একটি মৌলিক সমপর্ক হচ্ছে বন্ধুত্ব। জীবনে বন্ধুত্বের অনুপস্থিতির প্রভাব পড়বেই। তবে, ব্যস্ততার অজুহাতে বন্ধুত্বকে কিন্তু খুব সহজে উপেক্ষা করে ফেলে মানুষ। অবশ্য বর্তমান ব্যস্ত জীবন ধারার একটি বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, মানবমনে বন্ধুত্বের সংজ্ঞা প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হতে থাকা। এখন আমরা খুব সহজেই মানুষের সঙ্গে পরিচিত হতে পারছি। সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রতিটি মানুষেরই ৫০০র বেশি বন্ধু। দেখা, কথা ও চ্যাটিং হচ্ছে স্কাইপ, হোয়াটস অ্যাপ, ভাইবার ও ইমো’তে। তবে এই সংযোগ কিন্তু বাস্তবিক দূরত্ব কমাচ্ছে না, ক্ষেত্রবিশেষে বাড়িয়ে দিচ্ছে। ভার্চুয়াল জগতের বাইরে, রক্ত মাংসের জীবনে মানুষের বন্ধুর সংখ্যা কমছে। এক সমীক্ষায় এটা উঠে এসেছে যে, নব্বইয়ের দশকে যেখানে প্রতিটি মানুষের গড়ে তিনজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু থাকতো, বর্তমানে তা কমে দুজনে দাঁড়িয়েছে। অথচ, প্রযুক্তি আমাদের যোগাযোগের উপায়কে কিন্তু বাড়িয়েই দিয়েছে; কমায় নি! তবে কেন এই বিপরীতমুখী চিত্র? ভেবে দেখার বিষয়!
অর্থবহ বন্ধুত্বের জন্য করণীয়
বন্ধুত্বের আত্মিক তাৎপর্যের কথা যদি বাদও দেন, এর প্রামাণিক তাৎপর্য এড়ানোর কোনো উপায় নেই। যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউর একটি প্রবন্ধে প্রখ্যাত মনোবিদ নেইল জে রয়েসে লিখেছেন- গবেষণায় এটা প্রমাণিত যে, বন্ধুত্ব মানুষের ক্যারিয়ারে এবং উপার্জনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। বন্ধুত্বের আবেগপ্রবণতা মানুষকে উদ্দীপ্ত রাখে। মনোসংযোগ বাড়াতে সাহায্য করে। তাই, নিজের স্বার্থেই নির্মল বন্ধুত্ব বজায় রাখুন। ভাবুন, কীভাবে বন্ধুত্বের দাবি পূরণ করে তা আরো গভীর এবং নিবিড় করে তুলতে পারেন। নিজের প্রয়োজনেই বন্ধুত্বকে গুরুত্ব দিন। হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউতে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে ব্যস্ত তরুণ পেশাজীবীদের জন্য বন্ধুত্বের সমপর্ক টিকিয়ে রাখতে কিছু নির্দেশনা দেয়া হয়েছে-
১. বন্ধুদের সময় দিতে চেষ্টা করুন। অনেক সময় আমরা খেয়াল করি না যে, আমরা কী পরিমাণ আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পড়ছি। নিজের অজান্তেই কাছের বন্ধুদের দূরে সরিয়ে দেই। তারপর একসময় হঠাৎ খেয়াল করে দেখতে পাই, একদম একা হয়ে গেছি। অতএব, বন্ধুত্ব টিকিয়ে রাখতে সজাগ হন। খেয়াল রাখুন।
২. গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বন্ধুর মতামত চান। আপনার ঘনিষ্ঠ বন্ধুরাই আপনাকে সবচেয়ে ভালোভাবে জানেন, বোঝেন।
৩. মাঝেমাঝে সবাই একত্রিত হন। একসঙ্গে একটু আড্ডা দেয়া, ছবি দেখা ও ঘুরতে যাওয়া এসবের দরকার আছে।
৪. কাজের পাশাপাশি বন্ধুত্বকেও গুরুত্ব দিন। কাজ দরকারি। বন্ধুত্বও কিন্তু অদরকারি নয়। দুটোই গুরুত্বপূর্ণ।
৫. নিজের জয়ে বন্ধুদের পাশে রাখুন। পাশে রাখুন পরাজয়েও। সুসময়-দুঃসময়ে নিজেও তাদের পাশে থাকুন।
মনে রাখা প্রয়োজন, বন্ধুত্ব দরকারি। সেসঙ্গে এটাও সত্যি যে, বর্তমানের গতিময় জীবন ধারায় বন্ধুত্ব টিকিয়ে রেখে, বন্ধুত্বের দাবি পূরণ করে চলতে পারাটাও একটা চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে। নিজের ভালোর জন্যই সে চ্যালেঞ্জে জিততে হবে আমাদের।
অর্থবহ বন্ধুত্বের জন্য করণীয়
বন্ধুত্বের আত্মিক তাৎপর্যের কথা যদি বাদও দেন, এর প্রামাণিক তাৎপর্য এড়ানোর কোনো উপায় নেই। যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউর একটি প্রবন্ধে প্রখ্যাত মনোবিদ নেইল জে রয়েসে লিখেছেন- গবেষণায় এটা প্রমাণিত যে, বন্ধুত্ব মানুষের ক্যারিয়ারে এবং উপার্জনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। বন্ধুত্বের আবেগপ্রবণতা মানুষকে উদ্দীপ্ত রাখে। মনোসংযোগ বাড়াতে সাহায্য করে। তাই, নিজের স্বার্থেই নির্মল বন্ধুত্ব বজায় রাখুন। ভাবুন, কীভাবে বন্ধুত্বের দাবি পূরণ করে তা আরো গভীর এবং নিবিড় করে তুলতে পারেন। নিজের প্রয়োজনেই বন্ধুত্বকে গুরুত্ব দিন। হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউতে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে ব্যস্ত তরুণ পেশাজীবীদের জন্য বন্ধুত্বের সমপর্ক টিকিয়ে রাখতে কিছু নির্দেশনা দেয়া হয়েছে-
১. বন্ধুদের সময় দিতে চেষ্টা করুন। অনেক সময় আমরা খেয়াল করি না যে, আমরা কী পরিমাণ আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পড়ছি। নিজের অজান্তেই কাছের বন্ধুদের দূরে সরিয়ে দেই। তারপর একসময় হঠাৎ খেয়াল করে দেখতে পাই, একদম একা হয়ে গেছি। অতএব, বন্ধুত্ব টিকিয়ে রাখতে সজাগ হন। খেয়াল রাখুন।
২. গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বন্ধুর মতামত চান। আপনার ঘনিষ্ঠ বন্ধুরাই আপনাকে সবচেয়ে ভালোভাবে জানেন, বোঝেন।
৩. মাঝেমাঝে সবাই একত্রিত হন। একসঙ্গে একটু আড্ডা দেয়া, ছবি দেখা ও ঘুরতে যাওয়া এসবের দরকার আছে।
৪. কাজের পাশাপাশি বন্ধুত্বকেও গুরুত্ব দিন। কাজ দরকারি। বন্ধুত্বও কিন্তু অদরকারি নয়। দুটোই গুরুত্বপূর্ণ।
৫. নিজের জয়ে বন্ধুদের পাশে রাখুন। পাশে রাখুন পরাজয়েও। সুসময়-দুঃসময়ে নিজেও তাদের পাশে থাকুন।
মনে রাখা প্রয়োজন, বন্ধুত্ব দরকারি। সেসঙ্গে এটাও সত্যি যে, বর্তমানের গতিময় জীবন ধারায় বন্ধুত্ব টিকিয়ে রেখে, বন্ধুত্বের দাবি পূরণ করে চলতে পারাটাও একটা চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে। নিজের ভালোর জন্যই সে চ্যালেঞ্জে জিততে হবে আমাদের।