শেষের পাতা

জনতার হাতে আটক সেই খুনি ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত

স্টাফ রিপোর্টার

১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, সোমবার, ১০:২১ পূর্বাহ্ন

রাজধানীর মেরুল বাড্ডা এলাকায় খুন করে পালিয়ে যাওয়ার সময় জনতার হাতে আটক সেই নুরুল ইসলাম ওরফে নূরী (৩৫) ডিবি পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছে। শনিবার রাত আড়াইটার দিকে বাড্ডার  সাঁতারকুল রোডের প্রজাপতি গার্ডেন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল ও দুই রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে। পুলিশের দাবি, নূরী একজন ভাড়াটে কিলার ও সন্ত্রাসী। বনানীর জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান এসএম মুন্সী ওভারসিজের মালিক সিদ্দিক হোসেন মুন্সী হত্যা মামলার অন্যতম আসামি। বন্দুকযুদ্ধের সময় তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তবে আহত সেই পুলিশ সদস্যদের নাম জানা যায়নি। পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। শনিবার দুপুরে মেরুল বাড্ডার মাছ বাজার এলাকায় আবুল বাশার বাদশা (৩০) নামে এক মাদক ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় জনতা নূরীকে ধরে ফেলে। পরে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পুলিশ তাকে থানায় নিয়ে যাওয়ার পর ঢাকা মহানগর উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সদস্যরা নূরীকে নিয়ে অন্য আসামিদের ধরার জন্য রাতভর অভিযানে নামে।
ডিবি পুলিশ  জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃত নূরীকে ডিবি হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তার দেয়া তথ্য মতে শনিবার রাত আড়াইটার দিকে অন্য সহযোগীদের  গ্রেপ্তার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের জন্য বাড্ডার সাঁতারকুলে অভিযান চালানো হয়। এ সময় ৪/৫ জন দুষ্কৃতকারীকে দেখতে পায় পুলিশ। এসময় দুষ্কৃতকারীরা পুলিশের ওপর আক্রমণ করে নূরীকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে।
ঢাকা মহানগর উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের এডিসি মো. শাহজাহান জানান, নূরী একজন ভাড়াটে কিলার ও  সন্ত্রাসী। বনানী রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক সিদ্দিক হোসেন হত্যায় গণমাধ্যমে প্রচারিত ভিডিও ফুটেজের প্রথম ব্যক্তি এবং ওই ঘটনার মূল পরিকল্পনা বাস্তবায়নকারী। মাত্র ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে সে সিদ্দিককে গুলি করেছিল। নূরী মূলত ভাড়াটে খুনি। তার বিরুদ্ধে ঢাকা ও আশেপাশের থানায় অনেক মামলা রয়েছে। নূরী ৪৪ বছর সাজাপ্রাপ্ত আসামিও ছিল। এদিকে, আবুল বাশার বাদশাকে হত্যার ঘটনায় বাড্ডা থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। নিহতের স্ত্রী শিউলী আক্তার বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় ৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলা নম্বর: ১৮।  মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, মামলার এক আসামি পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছে। বাশার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় প্রত্যক্ষভাবে আরো ৩ জন অংশ নিয়েছিল। তাদের গ্রেপ্তারের জন্য ঢাকাসহ বিভিন্নস্থানে অভিযান চলছে। ডিবি পুলিশের পাশাপাশি থানা পুলিশও অভিযান চালাচ্ছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে, ৮ বছর ধরে বাশার টঙ্গীর গাজীপুরা এলাকায় থাকতো। সেখানে সে ইয়াবা ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। ওই এলাকায় মাদকের বড় চালান দিতো নুরু। মাদক ব্যবসার কারণে নুরুর সঙ্গে বাশারের সম্পর্ক তৈরি হয়। তবে সেই সম্পর্ক বেশিদিন টিকে থাকেনি। ব্যবসার দেড় লাখ টাকা নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। ২ মাস আগে বাশার তার স্ত্রীকে নিয়ে মেরুল বাড্ডার আনন্দ নগরে একটি টিনশেড বাসা ভাড়া নেয়। এরমধ্যে নুরু বাদশাকে টাকা আদায়ের চাপ দিতে থাকে। তার আর্থিক অবস্থা খারাপ যাচ্ছে বলে সে নুরুর কাছে সময় চায়। কিন্তু, নুরু তাকে সময় দিতে রাজি হয়নি। শনিবার দুপুরে নুরুসহ চারজন মেরুল বাড্ডার মাছের বাজারে গণশৌচাগারে যায়। গণশৌচাগারের সামনে নুরুর সঙ্গে বাশারের কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে নুরু বাশারের চোয়ালে গুলি করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে স্থানীয় জনতা তাকে ধাওয়া দিয়ে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status