দেশ বিদেশ

ডিসেম্বরে অবসরে যাওয়ার ঘোষণা অর্থমন্ত্রীর

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, রবিবার, ৯:২২ পূর্বাহ্ন

ক্যারিয়ারের এক জায়গায় বহুদিন থাকলে পচন আসে, তাই আগামী ডিসেম্বরেই সত্যিকারভাবেই অবসরে যাব বলে ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। গতকাল রাজধানীর হোটেল লা মেরিডিয়ানে অগ্রণী ব্যাংকের বার্ষিক ব্যবসায়িক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান। অর্থমন্ত্রী বলেন, বহুদিন এক জায়গায় থাকলে পচন আসে, আমি এবার সত্যিকার ভাবেই অবসরে যেতে চাই। তিনি বলেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে আমি প্রার্থী হতে চাই না। অবসর সময় কাটাতে চাই। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চাইলে না করার সুযোগ থাকে না। এ বিষয়ে আগামী এপ্রিলে জানাতে পারবো। অর্থমন্ত্রী বক্তব্যে শুরুতে আর্থিক খাতের অবস্থা ভালো কি-না সে ব্যাপারে প্রশ্ন আছে উল্লেখ করে বলেন, পত্রিকায় দেখলাম এ দেশের একজন সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীকে উপদেশ দিয়েছেন দু’জন ব্যক্তিকে যেখানে দায়িত্বটা গুরুত্বপূর্ণ না, সেখানে পাঠিয়ে দিতে। দুজনের একজন সুযোগ্য শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ও আরেকজন আমি। এই বছরের ডিসেম্বর আমি রিটায়ার্ড করবো। একটা সময় আসে, তাই রিটায়ার্ড করাই ভালো।
মুহিত বলেন, তৎকালীন হাবিব ব্যাংক ও কমার্স ব্যাংক মিলে এই অগ্রণী ব্যাংক গঠন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে আমিই একমাত্র ব্যক্তি যে এসব কাজে সেই সময়ে যুক্ত ছিলাম। দীর্ঘসময় ধরে আছি। বেশি সময় থাকা উচিত নয়। এতে পচন ধরে। মাত্র ১১ মাস পর ডিসেম্বরের অবসরে যাবো।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বদরুদ্দোজা চৌধুরীর মনে হয় সে রকম রিটায়ারমেন্টের ধারণা নেই। না হলে তাকেই উপদেশ দিতে চেয়েছিলাম যেকোনো একটা সময় আসে বোধহয় তখন রিটায়ারমেন্ট করাটাই আমাদের জন্য ভালো এবং রিটায়ারমেন্টে যেভাবে থাকা যায়, সেভাবেই আমাদের থাকা উচিত। ক্যারিয়ারে বহুদিন থাকলে নিশ্চয় পচন আসে। সেই পচনের পরিণতিটা মানুষের মধ্যে বেশি পরিমাণে। সুতরাং আমরাও সে ধরনের চিন্তাভাবনা করি।
ব্যাংক সেবার বিষয়ে মুহিত বলেন, আমাদের দেশে ব্যাংকিং সার্ভিস ততটা প্রসারিত হয়নি। আমাদের ব্যাংকের শাখা আরো বাড়ানো উচিত। কারণ ব্যাংকে যত বেশি লোককে জড়িত করতে পারি, ততই আর্থিক কর্মকাণ্ড বেশি শক্তিশালী হবে। আর্থিক কর্মকাণ্ড যত শক্তিশালী হয়, ততই দেশের উন্নয়ন হয়।
ঋণখেলাপি হওয়ার ঝুঁকি কমাতে ব্যাংকারদের পরামর্শ দিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ঋণখেলাপি হওয়া প্রতিরোধ করতে ব্যাংকারদের দুটি বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। প্রথমত, ঋণ গ্রহীতার প্রকল্প প্রস্তাবনা ভালোমতো খতিয়ে দেখতে হবে। প্রকল্পটি টেকসই হবে কিনা সে বিষয়গুলো বিবেচনায় আনতে হবে। দ্বিতীয়ত, ঋণ গ্রহীতার বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে তার সঙ্গে ব্যাংকের সম্পর্ক উন্নত করতে হবে।
অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, ব্যাংকিং খাত নিয়ে অস্বস্তি রয়েছে। বাজারে অনেক নেতিবাচক ধারণা রয়েছে। আমাদের অনেকের কাছে জবাবদিহি করতে হচ্ছে। তবে একথা সত্যি, ব্যাংকিং খাতে কিছুটা ভালো পরিবেশ রয়েছে। এটি সম্ভব হয়েছে- দেশের সার্বিক পরিস্থিতি ভালো রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, ঋণ আমানত অনুপাত (এডিআর) নিয়ে ব্যাংক খাতে অহেতুক প্যানিক দেখা দিয়েছে। তিনি জানান, এডিআর কমানোর কারণে এখন সামগ্রিক ব্যাংক খাতে ১১ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত ঋণ আছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক এবং ফার্মাস ব্যাংকের আছে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখত। এতে উপস্থিত ছিলেন- অর্থ প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব ইউনুসুর রহমান, ব্যাংকের এমডি শাসমুল ইসলাম।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status