বাংলারজমিন

ডাক্তার সরকারি রোগী দেখেন প্রাইভেটে

মোরশেদ আলম, চাঁদপুর থেকে

১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, শনিবার, ৯:১০ পূর্বাহ্ন

ডাক্তার সরকারি। প্রতিদিন রোগী দেখেন প্রাইভেট ক্লিনিকে। অফিসে যান হাজিরা দিতে। হাজিরা দিয়েই চলে যান প্রাইভেট চেম্বারে। নিজের মতো করেই স্বাধীনভাবে সরকারি প্রতিষ্ঠানে হাজিরা রেখে প্রাইভেটে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। চাঁদপুর সদর উপজেলা মেডিকেল অফিসার ডা. আঞ্জুম আরা ফেন্সি প্রতিদিন সরকারি হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দিয়ে মাসিক সরকারি বেতন-ভাতা ভোগ করলেও সরকারি প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব পালন করছেন না। কোনো কিছুকেই তোয়াক্কা না করে প্রতিদিন হাজিরা দিয়েই নিয়মিত রোগী দেখেন প্রাইভেট ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। শুধুমাত্র হাজিরা দিতেই অফিসে যান।
চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদের মেডিকেল অফিসার ডা. আঞ্জুম আরা ফেন্সি দীর্ঘদিন ধরে জুনিয়র কনসালটেন্ট (অ্যানেসথেশিয়া) পদে আছেন। এখানে নিয়োগ লাভের পর এই প্রতিষ্ঠানে তিনি নিয়মিত দায়িত্ব পালন ছাড়াই শুধু স্বাক্ষর দিয়ে কর্মরত আছেন। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী যেখানে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ডিউটি করার কথা- সেখানে ডা. আঞ্জুম আরা তা না করে নিয়মিত রোগী দেখছেন চাঁদপুর শহরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সড়কস্থ আমিন প্লাজার দি কমফোর্ট প্যাথলজিকাল ল্যাবে। নিয়মিত ডিউটি করার কথা থাকলেও তিনি সেখানে না থেকে সকালে অফিসে গিয়ে শুধুমাত্র হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দিয়ে রোগী দেখার জন্য চলে আসেন দি কমফোর্ট প্যাথলজিকাল ল্যাবে। দিনের বাকি সময়টুকু সেখানেই কাটে ওই চিকিৎসকের।
সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, দি কমফোর্ট প্যাথলজিকাল ল্যাবে অন্যান্য চিকিৎসকের সাইনবোর্ডের সঙ্গে ডা. আঞ্জুম আরা ফেন্সির নামেও সাইনবোর্ড টানানো আছে। ওই সাইনবোর্ডে লেখা রয়েছে, প্রসূতি ও গাইনি এবং আল্ট্রাসনোগ্রাফি বিশেষজ্ঞ ডা. আঞ্জুম আরা ফেন্সির নিয়মিত রোগী দেখার কথা। প্রায় ১৫/১৬ দিন ধরে অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সদর উপজেলা পরিষদের মেডিকেল অফিসারের দায়িত্ব রেখে ডা. আঞ্জুম আরা ফেন্সি সকাল ১১টা কি সাড়ে ১১টার পর থেকেই ওই প্রাইভেট ডায়াগনস্টিকে প্রতিদিন নিয়মিত রোগী দেখছেন। সর্বশেষ গত ৪ঠা ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ১১টার দিকে প্রথমে ওই ল্যাবে একজন রোগীকে পাঠানো হয়। তারপর এ প্রতিবেদক নিজেই তার কাছে বক্তব্যের জন্য যান। তার এ অনিয়মের বিষয়ে জানতে।
আঞ্জুম আরা ফেন্সি বলেন, আমার তো সদর উপজেলায় রোগী দেখার নিয়ম নেই। সেখানে কাজ হলো বিভিন্ন মিটিং, ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প, টিকাদান কর্মসূচি, উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন মিটিংয়ে অংশ নেয়া ও পরীক্ষার হলে দায়িত্ব পালন করা। তাই সেখানে তেমন কাজ না থাকাতে বাকি সময়টুকু সুযোগ পেলে এখানে রোগীদের সেবা করি। ওইদিন বেলা সাড়ে ১১টায় তিনি সেখানে কেনো? জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার একটি স্কুলে পরীক্ষার হলে ডিউটি পড়েছে তাই এসেছি। কিন্তু প্রশ্ন হলো পরীক্ষার হলে যদি ডিউটি থাকে তা হলে ওই চিকিৎসক ওই পরীক্ষার হলে থাকার কথা, তাহলে তিনি প্রাইভেট ল্যাবে কেনো? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্কুলে বসার জায়গা না থাকার কারণে তিনি ল্যাবে এসেছেন।
চাঁদপুরের সিভিল সার্জন ডা. সফিকুল ইসলাম (ভারপ্রাপ্ত) জানান, সে যেই হোক না কেনো, তার কর্মস্থলে যদি কোনো কাজ না ও থাকে তারপরও তিনি সরকারি প্রতিষ্ঠান রেখে এমন অনিয়ম করতে পারেন না।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status