বাংলারজমিন

সন্তানের পিতৃপরিচয়ের দাবিতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন জরিনা

সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, শনিবার, ৮:৩৭ পূর্বাহ্ন

সাত মাস বয়সের শিশুকন্যা সিনহা বড় হয়ে যখন জানতে চাইবো কে তার বাবা? তখন আমি কি জবাব দিমু? আমি জীবনে আর কিছুই চাই না; শুধু মেয়েটার পিতৃপরিচয়ের স্বীকৃতি চাই। আমি ডিএনএ পরীক্ষা দিবারও রাজি আছি। তবুও যেন আমার মেয়েটা তার পিতৃপরিচয় পায়। মেয়েটার জন্যই বহু কষ্ট বুকে চাইপ্যা রাইখ্যা বাইচ্যা (বেঁচে) আছি। এ কথাগুলো বলতে বলতে অঝোর কান্নায় ভেঙে পড়েন জরিনা বেগম নামের এক মা। তিনি টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কালিয়া ইউনিয়নের বড়চওনা বিন্নাখাইড়া গ্রামের আফাজ উদ্দিনের ছেলে আবু বকরের প্রতারণার ফাঁদে পড়ে দু’কূল হারাতে বসেছেন। না পাচ্ছেন বাবার ঘরে ঠাঁই; না পাচ্ছেন স্বামীর ঘরে। তিনি একই এলাকার কৃষক দুলাল হোসেনের মেয়ে। জানা যায়, প্রায় ৫ বছর আগে জরিনা আক্তারের সঙ্গে আবু বকরের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিয়ের প্রলোভনে একপর্যায়ে ওই সম্পর্ক দৈহিক মেলামেশা পর্যন্ত গড়ায়। প্রায় দেড় বছর আগে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন জরিনা। বিয়ের জন্যে চাপ দিলে আবু বকর নানা তালবাহানা করতে থাকে। পরে পরিবার ও স্থানীয় মাতব্বরদের সমন্বয়ে আবু বকরের সঙ্গে সামাজিকভাবে জরিনার বিয়ে হয়। ওই বিয়ের দুই মাস পর স্থানীয় একটি ক্লিনিকে কন্যা সন্তানের জন্ম হলে জরিনাকে আর নিজের বাড়িতে নেয়নি স্বামী আবু বকর। জরিনার দাবি- কন্যা সন্তান হওয়ায় স্বামী আবু বকরের মন খারাপ হয়ে যায়। আবু বকর প্রভাবশালী পরিবারের সন্তান হওয়ায় দিনমজুর কৃষকের মেয়ে জরিনাকে তাড়িয়ে দিতে নানা ফন্দি করতে থাকে। এখন সে বলে বেড়াচ্ছে- ওই সন্তান তার নয়। পরে জরিনা বেগম শিশু কন্যাকে নিয়ে স্থানীয় কালিয়া ইউনিয়ন পরিষদে বিচার প্রার্থী হন। কালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম কামরুল হাসান বলেন, বিষয়টি নিয়ে দরবার হয়েছে। তবে জরিনা নামের মেয়েটির বয়স কম হওয়ায় গ্রাম্য সালিশে নিষ্পত্তি করা সম্ভব হয়নি। শুনেছি তারা পারিবারিক আদালতের শরণাপন্ন হয়েছে।
জরিনার বাবা দুলাল হোসেন বলেন, বিয়ের সময় ছেলে পক্ষ আমার মেয়ের নামে ১৫ শতক জমি লিখে দেয়। শুনেছি আবু বকর এখন উল্টো আমার নামে ও মেয়ের মায়ের নামে মামলা করেছে। প্রভাব খাটিয়ে আমাদের নামে বদনাম ছড়াচ্ছে। এমন কি এলাকা ছাড়ার হুমকিও দিচ্ছে। জরিনা আক্তার বলেন, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আবু বকর তার সঙ্গে মেলামেশা করে। কন্যা সন্তান হওয়ায় স্বামী আবু বকরের মন খারাপ হয়ে যায়। এখন ভরণ পোষণ তো দূরের কথা সন্তানকেই সে অস্বীকার করছে। ওনি আমাকে মেনে নিচ্ছেন না তাতে দুঃখ নেই। কিন্তু অবুঝ মেয়েটা যেন তার পিতৃপরিচয় পায়।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status