প্রথম পাতা

গোয়েন্দা তথ্য ফাঁস ঠেকাতে চিঠি

দীন ইসলাম

১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ১০:১৪ পূর্বাহ্ন

রাষ্ট্রীয় তথ্য সরকারের কাছে পৌঁছানোর আগেই ফাঁস হয়ে যাচ্ছে। তাই দেশের বিভিন্ন ইস্যুতে সরকারের কাছে পাঠানো গোয়েন্দা তথ্য আর গোপন থাকছে না। গোপনীয়তা ও নিরাপত্তার স্বার্থে সব ধরনের তথ্যের যথাযথ গোপনীয়তা বজায় রাখতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের  কাছে চিঠি দিয়েছে একটি গোয়েন্দা সংস্থা। চিঠিতে গোপনীয়তা বজায় রাখা নিশ্চিত করতে সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ এবং এব্যাপারে কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়েছে। এর ভিত্তিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবের কাছে একটি আধা-সরকারি পত্র (ডিও লেটার) দিয়েছেন। সরকারি বিভিন্ন দপ্তর, অধিদপ্তর ও পরিদপ্তরে মন্ত্রণালয় বা বিভাগের চিঠি, মন্ত্রিপরিষদ সচিবের ডিও লেটার ও ডিজিএফআইয়ের চিঠি যোগ করে দিয়ে এসব চিঠির মর্মার্থ অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এর আগে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের লেখা আধা-সরকারি পত্রে (ডিও লেটার) সচিবদের সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়। এতে বলা হয়, আপনি নিশ্চয়ই অবগত আছেন যে, ডাইরেক্টর জেনারেল অব ফোর্সেস ইনটেলিজেন্স (ডিজিএফআই), জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই)সহ অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা কার্যে নিয়োজিত থেকে অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে অর্পিত দায়িত্ব পালন করে থাকে। গোয়েন্দা সংস্থা কর্তৃক সরবরাহকৃত তথ্য দেশ পরিচালনায় নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই সব অতি গোপনীয় তথ্য সিলগালাকৃত খামে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর পাঠানো হয়, যাতে উক্তরূপ তথ্য যথাযথ কর্তৃপক্ষ ছাড়া অন্য কারো কাছে প্রকাশিত না হয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের স্বাক্ষর করা ওই চিঠিতে বলা হয়, সমপ্রতি মহাপরিচালক, ডিজিএফআই কর্তৃক প্রেরিত আধা-সরকারি পত্র মারফত জানা যায় যে, গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের গোপনীয়তা অনেক সময় রক্ষিত হচ্ছে না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে উল্লেখ করা হয়, এমনকি উক্তরূপ প্রতিবেদনের ছায়ালিপিও কার্যার্থে সরবরাহ করা হয়, যা অনাকাঙ্ক্ষিত। চিঠিতে বলা হয়েছে, এই ধরনের কাজের ফলে সরকারি বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে গোয়েন্দা সংস্থাসমূহের সম্পর্কের অবনতি ঘটছে এবং মাঠপর্যায়ে গোয়েন্দা সংস্থাসমূহের কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। এতে বলা হয়, আপনার মন্ত্রণালয় ও বিভাগ ও আওতাধীন দপ্তর/সংস্থায় উল্লিখিত বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে যেকোনো গোয়েন্দা সংস্থার গোপনীয় প্রতিবেদন অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণপূর্বক যথাযথ কার্যক্রম গ্রহণে আপনার ব্যক্তিগত উদ্যোগ প্রত্যাশা করছি। এদিকে গেল বছরের ডিসেম্বরের শেষদিকে গোয়েন্দা সংস্থা থেকে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে আরেকটি চিঠি এসেছে। ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই) একটি অত্যন্ত সংবেদনশীল ও গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা, যা সশস্ত্র বাহিনীসহ অন্যান্য সংস্থা/প্রতিষ্ঠান এবং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিষয়ক তথ্য-উপাত্ত দ্বারা গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। এর পরিপ্রেক্ষিতে অত্র সংস্থা কর্তৃক প্রেরিত যেকোনো গোয়েন্দা তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষাপূর্বক যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করবে বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অত্র সংস্থা প্রত্যাশা করে। তাদের চিঠিতে একটি পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের বর্ণনা দিয়ে বলা হয়েছে, অত্র সংস্থার গোয়েন্দা প্রতিবেদন এবং প্রধানমন্ত্রীর অফিসের পত্রগুলো প্রকাশ পাওয়ার বিষয়টি তথ্যের নিরাপত্তা বিবেচনায় অত্যন্ত উদ্বেগজনক ও আশঙ্কার কারণ বলে অত্র সংস্থা মনে করে। বিভিন্ন দপ্তর, অধিদপ্তর ও পরিদপ্তরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মন্ত্রণালয়ের চিঠি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছেন তারা।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status