দেশ বিদেশ

কেবলই ভালোবাসা নয়

সুদীপ অধিকারী

১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, বুধবার, ৯:৪৬ পূর্বাহ্ন

ভালোবাসতে কে না চায়? জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষই ভালোবাসার কাঙাল। সেই ভালোবাসাকে একটি নির্দিষ্ট দিবসে বন্দি করার বিরোধী অনেকেই। তারা মনে করেন, ভালোবাসার জন্য কোনো নির্দিষ্ট দিন, সময় বা তারিখ লাগে না। একজন মানুষ তার ভালোবাসার মানুষকে সব সময়ই ভালোবাসে। এটা ঘটা করে পালন করার ভেতর তেমন কোনো মাহাত্ম্য নেই। একে অপরের মধ্যে ভালোবাসা থাকলে, যেকোনো সময়ই তা পালন করা যায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আদিত্য বলেন, আমি আমার বাবা-মা, ভাই, বোন, বন্ধুদেরকে সবসময়ই ভালোবাসি। কোনো নির্দিষ্ট দিনে ফুল দিয়ে তাদের প্রতি ভালোবাসা দেখানো এটা শুধুমাত্র হাস্যকরই না, তাদের ভালোবাসাকে অপমান করারও শামিল। তিনি বলেন, ভালোবাসা দিবসে শুধুমাত্র এক শ্রেণির মানুষের আয় বৃদ্ধি ছাড়া আর কিছু হয় না। অনেকেই অধিক লাভের আশায় এই দিন রাস্তায় ফুলের পসরা সাজিয়ে বসে। তিন টাকায় গোলাপ কিনে বিক্রি করে ৩০ টাকায়। রেস্টুরেন্টগুলোতে থাকে হরেক রকম খাবারের প্যাকেজ। রিকশা চালকেরাও সুযোগে ভাড়া হাকায় তিনগুণ। তাই কোনো নির্দিষ্ট দিনে ভালোবাসা দিবস উদযাপন শুধুমাত্র এর বাণিজ্যিকরণ ছাড়া আর কিছুই না। বেসরকারি বিশববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. মো. মোস্তফা রাসেল বলেন, বন্ধুর প্রতি বন্ধুর ভালোবাসা, সন্তানের সঙ্গে পিতা-মাতার ভালোবাসা, ভাই-বোনের ভালোবাসা, শিক্ষক-শিক্ষার্থীর ভালোবাসা সবই চিরন্তন। একে কোনো নির্দিষ্ট দিন, ক্ষণ, তারিখে পালনের মধ্যে তেমন কোনো বিশেষত্ব নেই। ব্যাংক কর্মী মেহেতাব খানম বলেন, ভালোবাসা দিয়ে মানুষ একে অপরের মধ্যকার সম্পর্কের বন্ধনটা আরো শক্ত করে তুলতে চায়। আর এতে শুধুমাত্র প্রয়োজন দু’জনের মধ্যে ভালো বোঝাপড়া ও গ্রহণযোগ্যতা। কিন্তু ভালোবাসা দিবস পালনের নামে যা হয় তা গ্রহণযোগ্য নয়।
সরকারি তিতুমীর কলেজের ছাত্র সৌরভ, বিখ্যাত সেই গানের লাইন, ‘ভালোবেসে সুখী হতে বল কে না চায়, রাধা সুখী হয়েছিল এই শ্যামরায়’ চয়ন করে বলেন, ভালোবাসা দিবস শুধুমাত্র কোটিপতি বাপের ছেলে-মেয়েদেরই পালন করা শোভা পায়। আমাদের মতো মধ্যবিত্ত পরিবারের না। ঢাকা শহরে পড়ালেখা করতে এসেছি। বাড়ি থেকে পাঠানো টাকা দিয়ে খুব কষ্ট করে মাস পার করতে হয়। কিন্তু ১৪ই ফেব্রুয়ারিতে ভালোবাসা দিবস পালনে বন্ধু-বান্ধবেরা অনেক আশা করে থাকে। তাদের মন রাখতে গিয়েই পরতে হয় নানা সংকটে। পকেটে যেমন টাকা থাকে সীমিত, তেমন সুযোগ বুঝে প্রায় সব কিছুরই দাম বাড়িয়ে দেয় বিক্রেতারা।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status