বাংলারজমিন
ঘুষ বন্ধে এসিল্যান্ডের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ
রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, বুধবার, ৮:৫১ পূর্বাহ্ন
ভূমি অফিসের মূল গেট পার হলে চোখে পড়বে পিলারে টাঙ্গানো একটি নির্দেশক বেল। এতে লেখা আছে কোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে কলিং বেল চাপুন, আপনার এসিল্যান্ডকে ডাকুন। তার সামনে বারান্দার নিচে একটি সেবা টেবিল। এসবের মানে কী? জিজ্ঞাসা করতেই সহকারী আজিমুন নাহার (রানী) মানবজমিন প্রতিনিধিকে বলেন, ঘুষ, দুর্নীতি ও হয়রানি বন্ধে এসিল্যান্ড স্যার কিছু ব্যাতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। সেবা প্রত্যাশী ব্যক্তিরা বেল চাপবেন। অফিসের ভেতর থেকে তাৎক্ষণিক বেরিয়ে আসবেন এসিল্যান্ড স্যার। সেবা টেবিলের সামনের চেয়ারে বসে কার কী সমস্যা শুনে অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তাৎক্ষণিক সমাধান দেয়ার নির্দেশ দেবেন। তিনি আরো বলেন, ঘুষ, দুর্নীতি বন্ধে অফিসের প্রত্যেকটি কক্ষে বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা। অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কিভাবে সেবা প্রদান করছেন তা তিনি রুমে বসেই মনিটরিং করেন। সরজমিন গিয়ে দেখা গেছে রাণীশংকৈল ভূমি অফিসে সেবার মান বৃদ্ধি পেয়েছে। কোনো প্রকার ঘুষ ছাড়া দ্রুত সেবা পেয়ে ভুক্তভোগী জনসাধারণের মনে স্বস্তি ফিরে এসেছে। গত পাঁচ মাস ধরে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মধ্য দিয়ে অফিসের কার্যক্রম চলছে। গত বছরের ১০ই সেপ্টেম্বর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে যোগদান করেন সোহাগ চন্দ্র সাহা। তিনি যোগদানের পর অফিসের এমন চিত্র দেখে হতবাক হয়ে যান। এরপর শুরু হয় তার শুদ্ধি অভিযান। পাল্টে যায় অফিসের পুরনো চিত্র। সব কিছুতেই আসে পরিবর্তন, ঘুচে যেতে থাকে আগের সব অপবাদ। বাড়তে থাকে সেবার মান, বৃদ্ধি পায় অফিসের সৌন্দর্য। অফিস থেকে বিনামূল্যে সরবরাহ করা হয় অর্পিত, নামজারি, চান্দিনা ভিটি, খাস ও হাজিরা সংক্রান্ত সব ফরম। এখন অফিসে কোনো কাজ করতে ঘুষ লাগে না, হয় না কোনো অবৈধ কাজ। একজনের জমি অন্যের নামে যায় না। দ্রুত হয়ে যায় সব কাজ। এ ব্যাপারে রাণীশংকৈল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি), সোহাগ চন্দ্র সাহা মানবজমিনকে বলেন, অফিসে জরুরি কাজে আসা ভুক্তভোগী জনসাধারণের কাঙ্ক্ষিত সেবা নিশ্চিত, অফিসের ঘুষ, দুর্নীতি প্রতিরোধ ও দালালদের দৌরাত্ম্য রোধে আমি নিজেই এসব উদ্যোগ নিয়েছি। এখন কাঙ্ক্ষিত সেবা পেয়ে স্থানীয় লোকজন অনেক খুশি হচ্ছেন। আমি আমার দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনের চেষ্টা করছি।