দেশ বিদেশ
উখিয়ার কুতুপালংয়ে ইইউর প্রতিনিধিদল
নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করেই রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো হবে
স্টাফ রিপোর্টার, উখিয়া থেকে
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, মঙ্গলবার, ৯:৫৫ পূর্বাহ্ন
রাখাইনে মর্মান্তিক নির্যাতনের মুখে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করেই ফেরত পাঠানো হবে। এ জন্য রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া একটু বিলম্বিত হচ্ছে জানিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে জাতিসংঘের রোহিঙ্গা বিষয়ক সংস্থা ‘ইউএনএইচসিআর’কে সম্পৃক্ত করে চুক্তি হয়েছে। তিনি আরো বলেন, জাতিসংঘের এই সংস্থাকে সঙ্গে নিয়ে রোহিঙ্গাদের নিরাপদে মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করে স্বদেশে ফেরত পাঠাতে চায় বাংলাদেশ। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় তাড়াহুড়া করলে এই পরিস্থিতি ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সোমবার উখিয়ার কুতুপালংয়ে নবগঠিত শরণার্থী ক্যাম্প মধুরছড়া কিউ কিউ জোন এলাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের ৩২ সদস্যের প্রতিনিধিদলকে সঙ্গে নিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনকালে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। সোমবার সকালে ইইউ প্রতিনিধি দল রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে এলে ক্যাম্পে অপেক্ষমাণ সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা ও এনজিও সংস্থার প্রতিনিধিরা তাদের স্বাগত জানান। পরে প্রতিনিধিরা রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘুরে তাদের আবাসস্থল, থাকা, খাওয়া, পয়ঃনিষ্কাশন, চিকিৎসা প্রভৃতি প্রত্যক্ষ করে নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের সঙ্গেও কথা বলেন। এ সময় বেশ কয়েকজন ধর্ষিত ও নির্যাতিত স্বামীহারা রোহিঙ্গা মহিলা তাদের স্বজনহারানোর শোকাহত ঘটনাবলী বর্ণনা দেন। পাশাপাশি মিয়ানমার সেনা কর্তৃক গুলিবিদ্ধ বেশ কয়েকজন পঙ্গু রোহিঙ্গা তাদের সর্বস্ব হারানোর কথা বলেন। দাবি জানান, মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হলে তাদের যেন আবারো এদেশে ফিরে আসতে না হয়। ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে ইইউ প্রতিনিধি দলের প্রধান জিন লামবারট বলেন, মিয়ানমারের পরিস্থিতি এখনো উদ্বেগজনক। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আন্তর্জাতিক মহল মনে করেন রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর আগে মিয়ানমার সরকারকে নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। তিনি আরো বলেন, রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের যে পরিস্থিতি কথা বর্ণনা করেছেন তাতে কোনোভাবেই সেই পরিবেশ তাদের অনুকূলে নয়। যে কারণে রোহিঙ্গারা মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি করে রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানান জিন লামবারট। প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ছিলেন, জেমস নিকলসন, রিচার্ড করবেট, ওয়াযিদ খান, সাজ্জাদ করিম, মার্ক তারাবেলাসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের ৩২ জন সদস্য। পরিদর্শনের সময় রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আলাপ ছাড়াও ত্রাণ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার বিভিন্ন প্রকল্প ঘুরে দেখে ইইউ প্রতিনিধিদল।