দেশ বিদেশ
পুলিশের তদন্তে শনাক্ত না হওয়া আসামি ধরা পড়লো পিবিআইয়ের হাতে
স্টাফ রিপোর্টার
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, মঙ্গলবার, ৯:৫৫ পূর্বাহ্ন
২০১৬ সালের ১২ই ডিসেম্বর তিন নারীকে চাপা দেয় একটি ট্রাক। ট্রাকটি ফেলে পালিয়ে যায় চালক। এতে ঘটনাস্থলে ও চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের তিনজনই মারা যান। দুর্ঘটনাটি ঘটে পশ্চিম ধোলাইপাড় এলাকায়। পরদিন শ্যামপুর থানায় অজ্ঞাত ট্রাক চালককে আসামি করে মামলা করেন নিহত এক নারীর স্বামী। দীর্ঘ ৬ মাস তদন্তের পর পুলিশ সত্যতা পায়। কিন্তু ঘাতক ট্রাকের চালককে শনাক্ত ছাড়াই আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে তারা। এদিকে ওই প্রতিবেদনে সন্তুষ্ট হতে পারেননি আদালত। পুনঃতদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কে নির্দেশ দেন। ঢাকা মহানগরী পিবিআইয়ের তদন্তে কিছুদিনেই শনাক্ত হয় আসামি। গত রোববার রাত সোয়া ১১টার দিকে ঘাতক ট্রাকের চালক সেকেন্দার সরদারকে (৫০) গ্রেপ্তার করা হয়। ঢাকা মহানগর পিবিআইয়ের বিশেষ পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ জানান, ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে ট্রাক চালিয়ে আসছিলেন রাসেল। নিহত মোছা. সুমনা বেগমের স্বামী রাসেল হাওলাদারের (২৬) দায়ের করা মামলা সূত্রে জানা যায়, তার স্ত্রী, স্ত্রীর বোন ফারজানা আক্তার (১৫) এবং তাদের সঙ্গী আছিয়া বেগম (২৩) মীর হাজিরবাগ ফ্যান ফ্যাক্টরিতে চাকরি করতো। ২০১৬ সালের ১৮ই ডিসেম্বর রাতে কাজ শেষে বাসায় ফিরছিলেন। শ্যামপুরের পশ্চিম ধোলাইপাড় হাইস্কুল গলির মহান ফাস্ট ফুড দোকানের পাশের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় একটি ট্রাক বেপরোয়া গতিতে তাদের চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান ফারজানা। সুমনা ও আছিয়া বেগমকে মুমূর্ষু অবস্থায় স্থানীয় লোকজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে নেয়ার পর সেখানে তার স্ত্রী সুমনাকেও কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছিয়া বেগমও ১২ দিন পর মারা যান। মামলাটি দীর্ঘ ৬ মাস তদন্ত করে শ্যামপুর থানা পুলিশ আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করে। রিপোর্টে বলা হয়, ঘটনা সত্য কিন্তু অজ্ঞাতনামা ট্রাক চালককে গ্রেপ্তার বা শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। পরে ব্যাপকভাবে তদন্ত করলে ঘাতক ট্রাক চালককে আটক করা সম্ভব মন্তব্য করে আদালত মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন। আদালতের আদেশে ঢাকা মহানগরী পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক মো. সিরাজুল ইসলাম বাবুল মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করেন। এ সংস্থার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. বশির আহমেদের নেতৃত্বে একটি দল গত রোববার রাত সোয়া ১১টায় শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া থানার জোববাটা গ্রামে অভিযান চালিয়ে ঘাতক ট্রাকচালক মো. সেকান্দার সরদার (৫০) কে আটক করে। তার বাড়ি একই গ্রামে। পিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদে সেকেন্দার জানিয়েছে, তার বৈধ কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘদিন ধরে ট্র্রাক চালিয়ে আসছিল। ঘটনার দিন ৩ জন মহিলা পথচারী তার ট্রাকে চাপা পরলে সে ট্রাকটি ফেলে রেখে কৌশলে পালিয়ে যায়।