বাংলারজমিন

লক্ষ্মীপুরে ভেজাল ঘি’র ছড়াছড়ি

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, মঙ্গলবার, ৭:৫৭ পূর্বাহ্ন

লক্ষ্মীপুরে বিভিন্ন হাটবাজারে নকল ভেজাল ঘি’র ছড়াছড়ি। বিএসটিআই এর ভুয়া লোগো ও নামিদামি কোম্পানির নাম ব্যবহার করে বাজারজাত করা হচ্ছে ভেজাল ঘি। এদিকে রামগঞ্জ উপজেলার সোনাপুর বাজারে ভেজাল ঘি বিক্রির মূল হোতা মেসার্স অনিল বণিক এন্ড সন্স এর মালিক পীযূষ বণিক, রাকিব হোসেন নাহিদ ফুড প্রোডাক্টস উত্তর মধ্যম হালিশহর চট্টগ্রাম এর বিরুদ্ধে লক্ষ্মীপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা করে বিএসটিআই। ২০১৫ সালের ২৮শে নভেম্বর এ মামলা করেন বিএসটিআই চট্টগ্রাম এ ফিল্ড অফিসার রিয়াজ হোসেন মোল্লা। এর ২০১৬ সালের ৪ঠা ফেব্রুয়ারি পীযূষ বণিকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। একই বছরে ১৬ ফেব্রুয়ারি পীযূষ বণিককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ২১ দিন কারাভোগের পর জামিনে বের হয়ে আবারো শুরু করেন ভেজাল ঘির ব্যবসা। সোনাপুর বাজারের বি-সাহার সত্ত্বাধিকারী অপু সাহার ইন্ধনে এসব ঘি বাজারজাত করা হয়। অপু সাহা নিজে নকল ঘি তৈরি করে বাজারজাত করে বলে অভিযোগ রয়েছে। যেমন রামগঞ্জ ও সমিতিরহাটসহ আশপাশের এলাকায় হোয়াইট কাউ গোল্ড ঘি, প্রিমিয়াম ও পিউর গাওয়া ঘি, রায়পুরে এসএ ঘি, মাদার ল্যান্ড ও হোয়াইট স্পেশাল, সদর উপজেলার পোদ্দার বাজার, মান্দারী খিলপাড়াসহ আশপাশের এলাকায় বিশুদ্ধ ও এসএ ঘি নামে নাহিদ ফুড প্রোডাক্টস উৎপাদিত এসব ঘি নামিদামি কোম্পানির মনোগ্রাম ব্যবহার করে এবং লেভেল লাগিয়ে বাজারজাত করা হচ্ছে। প্রতিটি ঘির মূল্যে নেয়া হচ্ছে ৫০০/৫৫০ টাকা। যার কোনোটির নেই বিএসটিআইর অনুমোদন। এসব ঘি মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
সাধারণ মানুষ জানায়, একটি সিন্ডিকেট তৈরি করে বেশি লাভের আশায় এসব ভেজাল ঘি প্রকাশ্যে বিক্রি করছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। নামিদামি কোম্পানির প্যাকেটের ওপর নিজস্ব তৈরিকৃত ভেজাল ঘির মনোগ্রাম লাগিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রামের ভুয়া ঠিকানা দিয়ে এজেন্টদের মাধ্যমে তা বাজারজাত করছে তারা। মাঝে মধ্যে স্থানীয় প্রশাসন নামেমাত্র অভিযান চালিয়ে দুই-একজনকে গ্রেপ্তার, জেলজরিমানা ও মামলা করা হয়। আবার জেল থেকে বের হয়ে পুরাদমে ফিরে যায় এ নকল ঘি ব্যবসায়। একই অবস্থায় জেলাসদরসহ অন্য উপজেলার প্রতিটি হাট-বাজারের চিত্রও। প্রশাসন দ্রুত অভিযান চালিয়ে অবৈধ মালিক ও ব্যবসায়ীদের গ্রেপ্তার করে ভেজাল ঘি বিক্রি বন্ধ করে প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা করবেন এমনটাই প্রত্যাশা করেন জেলাবাসী।
এ দিকে নাম না প্রকাশ করা শর্তে একাধিক ব্যবসায়ী জানান, বি-সাহার মালিক অপু সাহা একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এসব ঘি তৈরি করে বাজারজাত করছেন। যার কোনোটির বিএসটিআইর অনুমোদন নেই। তবে অপু সাহার দাবি, কোনো ভেজাল ঘি বিক্রি করেন না তিনি। ঘি দোকানে ওপেন বিক্রি করেন। তার বিক্রিকৃত সব ঘিয়ের বিএসটিআইর অনুমোদন রয়েছে। প্রয়োজনে তার ঘি ল্যাবেটরিতে পাঠিয়ে যাচাই-বাছাই করার দাবি জানান তিনি। অপরদিকে পিযুষ বণিক তার বিরুদ্ধে বিএসটিআইর মামলা ও কারাভোগের কথা স্বীকার করে এ প্রতিবেদককে বলেন, বিএসটিআইয়ের অনুমোদন নিয়ে এসব ঘি বাজারজাত করছেন। তবে প্রয়োজনে তার সঙ্গে দেখা করার অনুরোধও করেন তিনি। পুলিশ সুপার আসম মাহাতাব উদ্দিন জানান, এ বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে একডালা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. রেজাউল ইসলাম মুঠোফোনে ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, ‘আমার আইনে যা হওয়ার কথা তাই আমি করেছি। আপনার (সংবাদকর্মীকে) যা ইচ্ছে তাই আপনি লিখেন। এই বিষয়ে আর আমি আপনার সঙ্গে কোনো কথা বলবো না বলে চেয়ারম্যান ফোনের লাইন কেটে দেন।’ এ ব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোনিয়া বিনতে তাবিব বলেন, ‘এই বিষয়ে আমি একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ইউপি চেয়ারম্যানের অবহেলার কারণে পিরপালের এই জমি নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। তাই আমি এই দ্বন্দ্ব সমাধান করার জন্য পিরপালের এই সম্পত্তিগুলো সরকারের নামে (খাস) করে দিবো।  
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status