ঢাকা, ১৯ মে ২০২৪, রবিবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিঃ

বাংলারজমিন

বেরোবিতে আন্দোলনে আসতে শিক্ষার্থীদেরকে হুমকির অভিযোগ

বেরোবি প্রতিনিধি
৮ মে ২০২৪, বুধবার

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) বিভাগীয় প্রধান নিয়োগের দাবিতে দুইদিন ধরে চলছে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। এই বিক্ষোভে বিভাগের শিক্ষার্থীরা অংশ নিতে অনীহা প্রকাশ করলে নামের তালিকা জমা দেয়ার হুমকির অভিযোগ উঠেছে। হুমকির মুখে গতকাল শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। হুমকি দেয়া সংক্রান্ত একটি ভাইরাল স্ক্রিনশট গত সোমবার থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেছেন অনেক শিক্ষার্থী। তবে নামের তালিকা করে কার কাছে জমা দেয়া হবে ওই স্ক্রিনশট দেখে তা জানা যায়নি।
সোমবার সন্ধ্যায় ভাইরাল হওয়া ফেসবুক মেসেঞ্জার গ্রুপের একটি স্ক্রিনশটে দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের নাম উল্লেখ করে তাদের দ্রুত প্রশাসনিক ভবনে আন্দোলনে আসতে চাপ প্রয়োগ করা হয়। না আসলে আন্দোলনে না আসা শিক্ষার্থীদের নামের লিস্ট জমা দেয়ার হুমকি দেয়া হয় ওই স্ক্রিনশটে। স্ক্রিনশটটি নিজের ফেসবুক ওয়ালে পোস্ট করে এক শিক্ষার্থী লেখেন, ‘দারুণ সি আর নোটিশ! কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভয় দেখিয়ে আন্দোলনের নামে ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করার নীলনকশায় মেতে উঠেছে কুচক্রী মহল।’ আরেক শিক্ষার্থী লেখেন, এই লিস্ট দ্রুত জমা দেয়া হোক। কিন্তু কোথায় জমা দেয়া হবে? আমরাও হেড অফিসটা দেখতে চাই। এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘খুবই দুঃখজনক। শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত স্বার্থে ক্ষমতা অপব্যবহার করে।

বিজ্ঞাপন
শিক্ষাবহির্ভূত কাজে লাগানো নিন্দনীয় কাজ।’ 
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, আন্দোলনে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছে তারা আমাদের বিভাগের এক স্যারের কাছের স্টুডেন্ট হিসেবে বিভাগে পরিচিত। যেখানে বিভাগের অন্য শিক্ষকরা ওই শিক্ষকের ভয়ে বিভাগীয় প্রধান নিচ্ছে না সেখানে আমরা তো সাধারণ শিক্ষার্থী। আমাদের দরকার বিভাগীয় প্রধান। আমরা চাই প্রশাসন দ্রুত বিভাগীয় প্রধান দিক এবং সেটা আইন মেনেই। কোন শিক্ষকের ভয়ে এমন হচ্ছে জানতে চাইলে ওই শিক্ষার্থী নাম বলতে রাজি হয়নি। রোববার ৭ দিনের সময় নিয়ে আবারো আন্দোলনে নেমে প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও করার যৌক্তিকতা ছিলো কিনা প্রশ্নের জবাবে ওই শিক্ষার্থীরা জানান, আমাদের বিভাগের সিনিয়ররা আমাদের যেভাবে নির্দেশনা দেয় সেটাই করতে হয়। নাহলে লিস্ট জমা দেয়ার হুমকি দেয়া হয়।
জানা যায়, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. নজরুল ইসলামের মেয়াদ শেষ হয় এ বছরের ১০ই মার্চ। এরপর দায়িত্ব দেয়া হয় একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নিয়ামুন নাহারকে। কিন্তু তিনি দায়িত্ব নিতে অপারগতা প্রকাশ করলে সহকারী অধ্যাপক রহমতুল্লাহকে দায়িত্ব দেয় প্রশাসন। তিনিও অপারগতা প্রকাশ করেন। পরে সহকারী অধ্যাপক সারোয়ার আহমেদকে দায়িত্ব দেয়া হয়। কিন্তু তিনিও দায়িত্ব নেননি। এদিকে ফেসবুক ওয়ালে বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুল হক লেখেন, ‘অবৈধ শিক্ষকের বিভাগীয় প্রধান হওয়ার হুমকি চলছে! জালিয়াতি করে নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ায় কেন তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে না। মহামান্য হাইকোর্ট অবৈধ শিক্ষকের নিয়োগের ব্যাপারে এ রুল ও আদেশ জারি করেছেন। আবার দুদক ও ইউজিসি’র চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় তথ্যানুসন্ধান কমিটির রিপোর্টে বলেছে তার নিয়োগের সুপারিশই নেই। 
দ্রুত বিভাগীয় প্রধান নিয়োগের দাবিতে আন্দোলন করছেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। রোববার দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের গেটে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা। সোমবার তারা উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করে একই দাবি জানিয়েছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে গঠিত ৩ সদস্যের কমিটি এদিন উপচার্যের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এ বিষয়ে কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. শফিক আশরাফ বলেন, আমরা প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। ডিন কমিটির সভায় তা উন্মোচন করা হবে। এ বিষয়ে এখন কিছু বলা যাবে না। তবে আশা করি, শিগগিরই শিক্ষার্থীদের দাবি বাস্তবায়ন করা হবে।

বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

বাংলারজমিন সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status