খেলা
ছক্কার রেকর্ডে সৌম্যের পর জাকির-রাব্বি
স্পোর্টস রিপোর্টার
৪ মে ২০২৪, শনিবারদুই রাউন্ড বাকি থাকতেই চলতি ঢাকা প্রিমিয়ার লীগের শিরোপা নিশ্চিত করেছে আবাহনী লিমিটেড। গতকাল আবাহনীর কাছে হারের পরও রানার্সআপ হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে আছে মোহামেডান। তাই প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের কাছে শেষ দু্ই রাউন্ড স্রেফ আনুষ্ঠানিকতা। আনুষ্ঠানিকতার ম্যাচেই চার ছক্কার ফুলঝুড়ি ফুটিয়েছেন জাকির হাসান। ১২ ছক্কা হাকিয়ে রেকর্ড বইয়ে নাম তুলেছেন প্রাইম ব্যাংকের অধিনায়ক। বিকেএসপির চার নম্বর মাঠে শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাবের বিপক্ষে ১২ ছক্কা হাঁকিয়ে রেকর্ড বুকে নাম লেখিয়েছেন গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের তরুণ অলরাউন্ডার মাহফুজুর রহমান রাব্বি। এদিন ৩ ম্যাচে ছক্কা হয়েছে মোট ৮৪টি। জাকির-রাব্বির পর আবাহনী অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন মেরেছেন ১০টি ছক্কা। ৫ বছর পর লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে পাওয়া সেঞ্চুরিতে সাকিবের ছক্কা ছিল ৭টি। পাঁচটি ছক্কা মেরেছেন একই দলের ইয়াসির আলী রাব্বি।
ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলে তিনি আউট হন ১৩২ বলে ১৫৮ রান করে। কাল শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের বিপক্ষে ১২টি ছক্কা মারেন গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের মাহফুজুর রহমান রাব্বিও। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের অধিনায়ক রাব্বি ১১৮ বলের ইনিংসে ১২ ছক্কা ও তিন চারে করেন ১২৫ রান। ‘লিস্ট এ’ ক্রিকেটে বাংলাদেশের ব্যাটারদের মধ্যে এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি ছক্কার রেকর্ডে জাকির ও রাব্বি নিজেদের তুলে নিলেন যৌথভাবে দুই নম্বরে। ২০১৯ সালের প্রিমিয়ার লীগে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের বিপক্ষে আবাহনী লিমিটেডের হয়ে ১৫৩ বলে ২০৮ রানের ইনিংসে ১৬টি ছক্কা মেরেছিলেন সৌম্য সরকার। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে বাংলাদেশের একমাত্র ডাবল সেঞ্চুরি এখনও সেটিই। সেদিন ৩১৮ রান তাড়ায় জহুরুল ইসলামকে (১০০) নিয়ে বাংলাদেশের রেকর্ড ৩১২ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েছিলেন সৌম্য। রেকর্ডে জাকির, রাব্বির ওপরে যেমন সৌম্যর নাম, তেমনি জাকির রাব্বির ঠিক পরেও আছে তার নাম। আরেক দফায় যে ১১টি ছক্কাও মেরেছিলেন সৌম্য! ২০১৮ সালে অগ্রণী ব্যাংকের হয়ে ব্রাদার্স ইউনিয়নের বিপক্ষে ১২৭ বলে ১৫৪ রানের ইনিংসের পথে ওই ১১ ছক্কা মেরেছিলেন সৌম্য। সৌম্যর আগে রেকর্ডটি ছিল মাশরাফি বিন মুর্তজার।
২০১৬ সালে কলাবাগান ক্রীড়া চক্রের হয়ে শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাবের বিপক্ষে শতরানের ইনিংসে মাশরাফি বাউন্ডারি মেরেছিলেন ২টি, কিন্তু ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন ১১টি! ৫১ বলে ১০৪ রানের ইনিংসটির পথে সেদিন দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ডও গড়েছিলেন মাশরাফি। ‘লিস্ট এ’ ক্রিকেটে বাংলাদেশের দ্রুততম সেঞ্চুরির সেই রেকর্ডটি গত ডিসেম্বরে ভেঙে দেন হাবিবুর রহমান সোহান। বিসিএলের ওয়ানডে সংস্করণে শতরান স্পর্শ করেন তিনি ৪৯ বলে। ১১টি ছক্কার কীর্তি আছে বাংলাদেশের আরও একজন ব্যাটসম্যানের। বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান না হলেও ছক্কা মারার জন্য আলাদা পরিচিত তার আছে দেশের ক্রিকেটে। ২০১৯ সালে প্রাইম দোলেশ্বরের হয়ে ১১৬ বলে ১৪৮ রানের অপরাজিত ইনিংসে ওই ছক্কাগুলি মেরেছিলেন সাইফ হাসান। জাকির ও রাব্বির ১২ ছক্কার দিনই প্রিমিয়ার লীগের আরেক ম্যাচে ১০ ছক্কা মারেন আবাহনী লিমিটেডের অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।
ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসে তিনি করেন ১০১ বলে ১৩১ রান। মোসাদ্দেক ছাড়া বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে এক ইনিংসে ১০ ছক্কা মারতে পেরেছেন এজাজ আহমেদ এনামুল হক ও রকিবুল হাসান। ছক্কার বিশ্ব রেকর্ড থেকে অবশ্য অনেকটাই দূরে সৌম্য-জাকিররা। রেকর্ডটি আদতে অন্য সব ব্যাটম্যানের ধরাছোঁয়ার খানিকটা বাইরে নিয়ে গেছেন অস্ট্রেলিয়ার ডার্সি শর্ট। ২০১৯ সালে কুইন্সল্যান্ডের বিপক্ষে ২৫৭ রানের ইনিংস খেলার পথে ২৩টি ছক্কা মারেন ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। ছক্কার রেকর্ডের দুইয়ে থাকা দুই ব্যাটসম্যানের চেয়ে যা আধডজন বেশি! ২০০৭ সালে আইসিসি ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট ডিভিশন টু-তে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে ১৯৬ রানের ইনিংসের পথে ১৭টি ছক্কা মারেন নামিবিয়ার জেরি স্নাইম্যান। প্রায় ১১ বছর পর সেই রেকর্ড ভেঙে দেন ডার্সি শর্ট। পরে ২০১৯ বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৭১ বলে ১৪৮ রানের খুনে ইনিংসের পথে ১৬টি ছক্কা মারেন সেই সময়ের ইংলিশ অধিনায়ক এউইন মরগান। ওয়ানডে ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি ছক্কার রেকর্ড হয়ে তা টিকে আছে এখনও। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ১৬ ছক্কা সৌম্য ছাড়াও মেরেছেন রোহিত শর্মা, এবি ডি ভিলিয়ার্স, ক্রিস গেইল, ঋতুরাজ গায়কোয়াড় ও যুক্তরাষ্ট্রের জাসকারান সিং।